প্রচণ্ড গরমে স্কুলে হাজিরা কম, আলিপুরদুয়ারে সকালে স্কুল চালানোর দাবি

অয়ন দে, আলিপুরদুয়ার: উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলায় চলছে তীব্র দাবদাহ। গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রার পারদ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে চলেছে, যা ৩৫ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে…

Scorching Heat Hits Alipurduar Schools: Parents Urge Shift to Morning Sessions

অয়ন দে, আলিপুরদুয়ার: উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলায় চলছে তীব্র দাবদাহ। গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রার পারদ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে চলেছে, যা ৩৫ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। এই প্রচণ্ড গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে স্কুলগুলিতে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। আলিপুরদুয়ার কলেজিয়েট স্কুলের ইংরেজি মাধ্যম বিভাগের একজন শিক্ষিকা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দুপুর একটা নাগাদ শ্রেণীকক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা অনেকটাই কম ছিল। তীব্র গরমের কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা বারবার শ্রেণীকক্ষ থেকে বেরিয়ে ঠান্ডা জল পান করছেন, যা শিক্ষার পরিবেশেও প্রভাব ফেলছে।

জেলার অন্যান্য স্কুলগুলিতেও একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অভিভাবকদের একাংশের দাবি, এই তীব্র গরমে দিনের বেলায় স্কুল চালানো শিশুদের জন্য কষ্টকর। তাঁরা সকালে স্কুল চালানোর দাবি জানিয়েছেন, যাতে ছাত্র-ছাত্রীরা তীব্র তাপ ও আর্দ্রতার হাত থেকে কিছুটা রক্ষা পায়। একজন অভিভাবক বলেন, “এই গরমে বাচ্চারা স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। দুপুরে তীব্র রোদে স্কুলে থাকা তাদের জন্য কঠিন। সকালে স্কুল হলে তাদের জন্য সুবিধা হতো।”

   

তবে, শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানিয়েছেন, সরকারি নির্দেশ ছাড়া স্কুলের সময়সূচি পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। আলিপুরদুয়ার জেলার একাধিক স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনও নির্দেশিকা না আসা পর্যন্ত তারা বর্তমান সময়সূচি অনুসরণ করতে বাধ্য। একজন শিক্ষক বলেন, “আমরাও বুঝতে পারছি ছাত্র-ছাত্রীদের কষ্ট। কিন্তু সরকারি নির্দেশ ছাড়া আমরা সময় পরিবর্তন করতে পারছি না।”

এই তীব্র গরমে শুধু ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতিই কমেনি, শিক্ষকদের উপরও চাপ বেড়েছে। শ্রেণীকক্ষে পড়ানোর সময় ছাত্র-ছাত্রীদের ঘন ঘন জল পান করতে বাইরে যাওয়া শিক্ষার ধারাবাহিকতায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। এছাড়া, অনেক ছাত্র-ছাত্রী গরমের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, যা অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

Advertisements

আলিপুরদুয়ারের স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিভাবক ও শিক্ষক মহল থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। কেউ কেউ প্রস্তাব দিয়েছেন যে, গরমের তীব্রতা কমা পর্যন্ত স্কুলের সময় সকালে সরিয়ে আনা হোক বা অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করা হোক। তবে, এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি ঘোষণা আসেনি।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিন তীব্র গরম অব্যাহত থাকতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে স্কুলগুলিতে পানীয় জলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা এবং শ্রেণীকক্ষে পাখার মতো সুবিধা নিশ্চিত করার দাবিও উঠছে। অভিভাবকরা চান, তাদের সন্তানদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এই গরমে শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুলে পড়াশোনা একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং সকালে স্কুল চালানোর দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে।