HomeWest Bengalপতাকা তুলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিক্ষকের মৃত্যু

পতাকা তুলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিক্ষকের মৃত্যু

- Advertisement -

উত্তর ২৪ পরগনা: স্বাধীনতা দিবসের (Independence Day) সকালে আনন্দমুখর পরিবেশ মুহূর্তের মধ্যে শোকের ছায়ায় ঢেকে গেল উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ার মল্লিকপুর এলাকায়। মঙ্গলবার সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক শিক্ষকের। মৃত শিক্ষকের নাম এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি, তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি ওই এলাকারই একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, এদিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের প্রস্তুতি চলছিল। বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও স্থানীয় বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন। পতাকা লাগানোর জন্য লোহার পাইপ ব্যবহার করা হচ্ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, পাইপটি উপরের দিকে থাকা একটি হাই-টেনশন বিদ্যুতের তারের সংস্পর্শে আসে। মুহূর্তের মধ্যে প্রবল তড়িৎপ্রবাহে শিক্ষকটি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

   

ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষক ও গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাড়োয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে জানান, হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা কান্নায় ভেঙে পড়ে, শিক্ষক ও সহকর্মীরা শোকে হতবাক।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ তুলেছেন, বিদ্যালয়ের ঠিক উপরে দিয়ে হাই-টেনশন বিদ্যুতের লাইন যাওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তারা দীর্ঘদিন ধরে এই বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগকে জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এলাকাবাসীর দাবি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং জনবসতির উপরে দিয়ে এমন বিপজ্জনক বিদ্যুৎ লাইন অপসারণ করে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।

ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। হাড়োয়া থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, পাইপটি সরাসরি বিদ্যুতের তারে স্পর্শ করায় সঙ্গে সঙ্গে শরীরে প্রাণঘাতী তড়িৎপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়ে, যা মৃত্যুর কারণ।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, “স্বাধীনতা দিবসের দিন এমন এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা আমাদের বাকরুদ্ধ করে দিয়েছে। তিনি ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয় শিক্ষক। ছাত্রছাত্রীদের প্রতি তাঁর ছিল অপরিসীম ভালোবাসা।”

এদিকে, স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, স্বাধীনতা দিবসের দিনে যে অনুষ্ঠান আনন্দে ভরে ওঠার কথা ছিল, তা মুহূর্তে পরিণত হয়েছে বেদনার দিনে। অনেকেই বলেছেন, “এই দুর্ঘটনা যদি আগে সতর্কতা নেওয়া হতো, তবে এড়ানো যেত।”

এই ঘটনায় গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিক্ষকটির আকস্মিক মৃত্যু শুধুমাত্র বিদ্যালয় নয়, পুরো গ্রামকেই স্তম্ভিত করে দিয়েছে। আগামী দিনে যাতে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা আর না ঘটে, সেই আশাই করছে সবাই।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular