কলকাতা: বিজেপি শাসিত রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা, কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও ‘বাংলাদেশী’ তকমা দিয়ে পুশব্যাক, আর সেইসব রাজ্য থেকেই আসা এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিনা বাধায়, সসম্মনে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হল বলে সুর চড়ালেন তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
রবিবার অনুষ্ঠিত প্রথম দফার এসএসসি পরীক্ষায় উত্তরপ্রদেশ, বিহার, রাজস্থান থেকে আগত বহু পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় বসা নিয়ে এক্স-কে কুণাল লেখেন, “বাংলার SSCর পরীক্ষা দিতে আজ হাজির যোগীরাজ্যসহ ভিনরাজ্য, ডবল ইঞ্জিন সরকারের রাজ্যের কর্মপ্রার্থীরা। অনেকে বলছেন ওখানে চাকরি নেই। ঠিকমত পরীক্ষা হয় না। বারবার স্থগিত হয়েছে। তাঁরা এখানে পরীক্ষা দিতে এসেছেন। কিছু বুঝলেন?”
সেইসঙ্গে কুণাল লেখেন, “এখানে কেউ বলেনি বাংলার চাকরির পরীক্ষা শুধু বঙ্গবাসী দিতে পারবে। কেউ হয়রান করেনি। অপমান করেনি। বাধা দেয়নি। কিছু বুঝলেন? জয় বাংলা।” উল্লেখ্য, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, ওড়িশার মত বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলাদেশী সন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘুদের আটক, ডিটেনশান সেন্টারে অকথ্য অত্যাচার এমনকি বাংলাদেশে বহু মানুষকে পুশব্যাক নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। বাংলা-বাঙালি অস্মিতায় আঘাতের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সাম্প্রদায়িকতার পাশাপাশি বিজেপি ভাষা নিয়েও রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ রাজ্যের শাসকদলের। তবে এদিন বিজেপি শাসিত রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকার সরকার থাকা সত্ত্বেও কোথাও ৯ তো কোথাও ৫ বছর ধরে শিক্ষাক্ষেত্রে কোনও নিয়োগ হয়নি বলে অভিযোগ জানিয়েছেন সেইসব রাজ্য থেকে আগত পরীক্ষার্থীরাই। উত্তরপ্রদেশর চিত্রকূট থেকে আসা এসএসসি পরীক্ষার্থী দীনেশ সিং বলেন, “আমাদের রাজ্যে কবে পরীক্ষা হবে, ভগবান জানে। ডবল ইঞ্জিন সরকার বলে চাকরির স্বপ্ন তো দেখানো হয়, কিন্তু বাস্তবে তা কার্যকর হয় না। ২০২১-এ ফর্ম ফিলাপ করানো হলেও পরীক্ষা হওয়ার কোনও নামগন্ধ নেই”।
আরও এক পরীক্ষার্থী কথায়, “বিগত ১০ বছর ধরে নিয়োগের কোনও খবর নেই। শূন্যপদ প্রকাশিত হলেও পরীক্ষার আগেই ফাঁস হয়ে যায় প্রশ্নপত্র। পশ্চিমবঙ্গের স্কুল শিক্ষা কমিশনের পরীক্ষা হচ্ছে জেনে এখানে পরীক্ষা দিতে এসেছেন তিনি। পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষারত এক মহিলা পরীক্ষার্থী বলেন, পশ্চিমবঙ্গের এসএসসি তুলনামূলক সহজ। তাই এখানে আসা। রবিবার সকালে পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষারত ভিনরাজ্যের পরীক্ষার্থীদের মুখে নিজ-রাজ্যের সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়।