পশ্চিমবঙ্গের সন্দেশখালি (Sandeshkhali) আবারও খবরে উঠে এসেছে। তৃণমূলের বিজয় মিছিলের অভিযোগ ঘিরে উত্তাল হয়েছে এই এলাকা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অস্ত্র মিছিল ও বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (NHRC) তরফে বসিরহাটের পুলিশ সুপার এবং মিনাখাঁর এসডিপিও-কে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগের সূত্রপাত
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর সন্দেশখালির বেরমজুর এলাকায় তৃণমূলের বিজয় মিছিল হয়। অভিযোগ, ওই মিছিলে অস্ত্র প্রদর্শন করা হয়। লোহার রড এবং পিস্তল হাতে মিছিলকারীরা বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালায় বলে দাবি। এই ঘটনায় স্থানীয় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের অনেককেই বাড়ি ছেড়ে পালাতে হয়। অভিযোগ ওঠে, হামলাকারীরা তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের অনুগামী।
এই ঘটনা নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ দায়ের করা হয়। কমিশনের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত রিপোর্ট চেয়ে পুলিশের কাছে নোটিস পাঠানো হয়।
পুলিশের রিপোর্টে সন্তুষ্ট নয় কমিশন
পুলিশ তাদের রিপোর্টে জানায়, সন্দেশখালিতে এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু পুলিশের রিপোর্টে স্থানীয় কোনও ব্যক্তির নাম উল্লেখ ছিল না। অভিযোগকারী বা অভিযুক্ত কারও নাম রিপোর্টে না থাকায় কমিশন পুলিশের তদন্ত নিয়ে সন্দিহান।
কমিশনের মতে, পুলিশের রিপোর্টে অনেক ফাঁকফোকর রয়েছে। পুলিশ আদৌ সঠিকভাবে তদন্ত করেছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
কড়া বার্তা মানবাধিকার কমিশনের
এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বসিরহাটের পুলিশ সুপার এবং মিনাখাঁর এসডিপিও-কে কড়া বার্তা দেয়। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, ৬ সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণ তদন্ত করে রিপোর্ট পেশ করতে হবে। একইসঙ্গে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সন্দেশখালি নিয়ে বারবার বিতর্ক
সন্দেশখালি নিয়ে এই প্রথমবার বিতর্ক তৈরি হয়নি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরও সন্দেশখালিতে রাজনৈতিক সংঘর্ষের অভিযোগ উঠেছিল। সেই সময় একাধিক মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছিল।
মানবাধিকার কমিশনের নজরদারি
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, সন্দেশখালির ঘটনায় যদি প্রকৃত তদন্ত না হয় তবে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পুলিশের গাফিলতি প্রমাণ হলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সন্দেশখালির ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতির পরিবেশ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে। রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়েও উঠছে অভিযোগ। মানবাধিকার কমিশনের তদন্তে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা এখন দেখার।