পুজোর আগে এই রুটে নতুন ট্রেন পরিষেবা চালু

পুজোর মরসুমের আগে যাত্রীদের জন্য এল এক বড় সুখবর। পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের উদ্যোগে অবশেষে চালু হল নতুন ট্রেন পরিষেবা (New Train Service) কাটোয়া-আমোদপুর শাখায়।…

Sealdah Train Disruption

পুজোর মরসুমের আগে যাত্রীদের জন্য এল এক বড় সুখবর। পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের উদ্যোগে অবশেষে চালু হল নতুন ট্রেন পরিষেবা (New Train Service) কাটোয়া-আমোদপুর শাখায়। দীর্ঘদিন ধরে চলা যাত্রী সংগঠনের আন্দোলন এবং বারবার স্মারকলিপি জমা দেওয়ার ফলস্বরূপ এই পরিষেবা শুরু হওয়ায় এলাকায় খুশির হাওয়া। স্থানীয়রা মনে করছেন, এই নতুন ট্রেন চালু হওয়ায় পড়ুয়া, চাকুরিজীবী থেকে ব্যবসায়ী – সকলে উপকৃত হবেন।

সোমবার নতুন ট্রেনটি প্রথমবার কীর্ণাহার এবং লাভপুর হয়ে আমোদপুর পৌঁছতেই আমোদপুর-কাটোয়া রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা ঢাকঢোল বাজিয়ে, শাঁখ বাজিয়ে ট্রেনকে স্বাগত জানান। স্টেশন চত্বরে সাধারণ মানুষের উচ্ছ্বাস চোখে পড়ার মতো ছিল।

   

যাত্রী সংগঠনের পক্ষ থেকে জানা গেছে, বহুদিন ধরে তারা ট্রেন পরিষেবা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। নিত্যযাত্রীদের দুর্ভোগের কথা বারবার জানানো হলেও এতদিন সেই দাবি পূরণ হয়নি। অবশেষে রেল কর্তৃপক্ষ তাঁদের দাবি মেনে নতুন ট্রেন চালু করায় এলাকাবাসীরা উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছেন।

পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশন সূত্রে জানা যায়, নতুন ট্রেনটি কাটোয়া স্টেশন থেকে প্রতিদিন বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে ছাড়বে এবং আমোদপুর পৌঁছবে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে। এরপর আমোদপুর থেকে বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে ছাড়বে এবং সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে ফের কাটোয়ায় পৌঁছবে। এই সময়সূচি অনুযায়ী স্থানীয় নিত্যযাত্রীদের যাতায়াত অনেক সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

কাটোয়া-আমোদপুর ট্রেন পরিষেবা বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্তে নিত্যযাত্রীদের পাশাপাশি পড়ুয়া এবং ছোট ব্যবসায়ীরাও স্বস্তি পেয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে যাতায়াতের অসুবিধার কারণে অনেক যাত্রীকে বিকল্প পরিবহণ ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছিল। এতে সময় এবং খরচ দুই-ই বাড়ছিল। নতুন ট্রেন পরিষেবা চালু হওয়ায় তাঁদের সেই সমস্যা মিটবে।

Advertisements

নিত্যযাত্রী রত্না মুখোপাধ্যায় এবং মদন বিশ্বাস সংবাদমাধ্যমে বলেন, “নতুন ট্রেন চালু হওয়ায় আমাদের যাতায়াত অনেক সহজ হবে। স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা যেমন সুবিধা পাবে, তেমনই চাকুরিজীবীরাও সময় বাঁচাতে পারবেন।”

এই ট্রেন চালুর দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন চালিয়ে আসা নানুরের তৃণমূল বিধায়ক বিধান মাঝি জানান, “এই ট্রেন পরিষেবা শুরু হলেও আন্দোলন এখানেই শেষ নয়। যতদিন না রামপুরহাট থেকে আমোদপুর-কাটোয়া হয়ে সরাসরি হাওড়া বা শিয়ালদাগামী ট্রেন চালু হচ্ছে, ততদিন যাত্রী সংগঠন লড়াই চালিয়ে যাবে।”

পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম এবং আশপাশের গ্রামীণ এলাকার যাত্রীরা মনে করছেন, দুর্গাপূজার আগে এই ট্রেন পরিষেবা তাঁদের ভ্রমণ এবং কেনাকাটার পরিকল্পনা আরও সহজ করবে। বহু মানুষ কলকাতা ও জেলার বড় শহরে কেনাকাটা এবং আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে যান, তাই এই নতুন পরিষেবা তাঁদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।

রেল সূত্রে জানা গেছে, কাটোয়া-আমোদপুর শাখায় যাত্রীসংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। তাই ভবিষ্যতে এই রুটে আরও ট্রেন চালানোর বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু করেছে। স্থানীয়দের আশা, পুজোর মরসুমেই হয়তো আরও কিছু সুখবর শোনা যাবে।