আগামী সোমবার থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা, শিক্ষা দপ্তরের পাশাপাশি এবার সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে বন দপ্তর ও। সালটা ২০২৩ বৈকুন্ঠপুরের মহারাজঘাটে হাতির আক্রমণে মৃত্যু হয় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অর্জুন দাসের। মর্মান্তিক এই ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন, সঙ্গে বন দপ্তর ও।
এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় তার জন্য প্রতিবারের মতো ব্যবস্থা নিয়েছে বন দপ্তর। বন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে তাদের তরফে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন এলাকার মানচিত্র তৈরী করা হয়েছে। কোন পথ দিয়ে গেলে জঙ্গল পেরোতে হবে এবং কোন জঙ্গলে কোন প্রাণীর ভয় সে কথা মাথায় রেখেই তৈরী করা হয়েছে এই মানচিত্র।
উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিংপঙ , জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার সংলগ্ন এলাকাতে জঙ্গল পথ অনেক বেশি। এই এলাকাগুলোর পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রশাসন। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প এবং এর আশপাশের বিভিন্ন জঙ্গল এলাকায় প্রায় ৪০০ পরীক্ষার্থী রয়েছেন। অন্যদিকে, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের জঙ্গল এবং আশেপাশের এলাকাগুলো তে আছে প্রায় ৩৫০ জন পরীক্ষার্থী। দার্জিলিং জেলার পঞ্চাশটিরও বেশি স্কুলের পরীক্ষার্থীরা জঙ্গল-পথ পাড়ি দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাবে।
শুধু পানিঘাটা রেঞ্জের জঙ্গল ঘেঁষা এলাকায় প্রায় ৫০০ পরীক্ষার্থী রয়েছে, যাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জঙ্গল পথে মোতায়েন করা হবে ঐরাবত বাহিনীও। যেখানে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি, সেখানে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে পরীক্ষার্থীরা নিরাপদে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেন। অন্যদিকে, যেখানে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম, সেখানকার জন্য ছোট গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশাসন জানায়, সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে যাতে কোনো পরীক্ষার্থী কোনো সমস্যায় না পড়েন।
এছাড়াও, বন দফতর এবং স্থানীয় প্রশাসন যৌথভাবে পরীক্ষার দিনে পর্যাপ্ত নজরদারি করবে। পরীক্ষার্থীদের জন্য নিয়মিত সচেতনতা প্রচার চালানো হচ্ছে, যাতে তারা নিরাপদে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারে এবং যেকোনো বিপদ থেকে বাঁচতে দ্রুত কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারে। এবারের পরীক্ষায় যাতে কোনো বন্যপ্রাণী আক্রমণ বা অন্যান্য বিপদের কারণে পরীক্ষার্থীদের সুরক্ষা বিঘ্নিত না হয়, সেজন্য বন দফতরের বিশেষ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। প্রশাসনের এই পদক্ষেপে জঙ্গল এলাকার বাসিন্দা এবং পরীক্ষার্থী পরিবারের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।