গভীর নিম্নচাপে চার জেলাকে আগাম প্রস্তুতির নির্দেশ নবান্নর

কলকাতা: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ধীরে ধীরে স্থলভাগে প্রবেশ করছে এবং এর প্রভাবে আগামী কয়েক দিন রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করেছে আবহাওয়া…

Weather Update of bengal

কলকাতা: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ধীরে ধীরে স্থলভাগে প্রবেশ করছে এবং এর প্রভাবে আগামী কয়েক দিন রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। পরিস্থিতি বিবেচনা করে ইতিমধ্যেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে নবান্ন (Nabanna)। হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলিকে আগাম প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।

Advertisements

শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জরুরি বৈঠকে বসেন সেচ দফতর, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর এবং রাজ্যের সব জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে। বৈঠকে তিনি জানান, ডিভিসি ইতিমধ্যেই প্রায় ৭০ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে। আগামী দিনে আরও জল ছাড়া হলে জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং তাতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

   

আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের অতি গভীর নিম্নচাপ শুক্রবার গভীর নিম্নচাপে রূপান্তরিত হয়েছে। বর্তমানে এটি ওড়িশার সম্বলপুর অঞ্চলের কাছাকাছি অবস্থান করছে এবং ধীরে ধীরে উত্তর ওড়িশা থেকে ছত্তীশগঢ়ের দিকে অগ্রসর হবে। এর ফলে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গে প্রবেশ করছে, যা আগামী কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাতের অন্যতম কারণ হবে।

এই গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলিতে বিশেষভাবে প্রভাব পড়বে। মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই বর্ধমান এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে একাধিক স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, কারণ সেখানে জলীয় বাষ্প প্রবাহের কারণে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে।

ওড়িশায় প্রবল বৃষ্টির কারণে পশ্চিমবঙ্গের ব্যারেজ ও জলাধারগুলির ওপর চাপ বাড়ছে। প্রচুর বৃষ্টির ফলে জলাধারগুলি থেকে জল ছাড়া হলে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। গত মাসে পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক এলাকা ভারী বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তখন ফসল ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। এবারও একই ধরনের পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

প্রশাসন জানিয়েছে, প্রতিটি জেলায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। নদী ও খালের জলস্তরের ওপর নিয়মিত নজরদারি চালানো হচ্ছে। প্রয়োজনে তীরবর্তী এলাকার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা দক্ষিণবঙ্গের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রবল বৃষ্টির পাশাপাশি বজ্রবিদ্যুৎ এবং ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। সেই সঙ্গে শহর ও গ্রামীণ এলাকায় জল জমে জনজীবনে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। পুজোর ঠিক আগে এমন আবহাওয়ার পূর্বাভাসে চিন্তায় সাধারণ মানুষ থেকে কৃষকরা।

এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন থেকে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার আবেদন জানানো হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং নদী বা জলাশয়ের কাছাকাছি এলাকায় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে। আগামী কয়েক দিন বৃষ্টি ও জলবৃদ্ধির ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।