মহরম অনুষ্ঠানে অস্বাভাবিক মৃত্যু, সোমবার বনধের ডাক শুভেন্দুর

মিলন পণ্ডা, খেজুরি: পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি ২ ব্লকের পশ্চিম ভাঙ্গনমারি গ্রামে মহরম (Muharram) উপলক্ষে আয়োজিত নৃত্য অনুষ্ঠানে দু’জন সাধারণ মানুষের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।…

মহরম অনুষ্ঠানে অস্বাভাবিক মৃত্যু, সোমবার বনধের ডাক শুভেন্দুর

মিলন পণ্ডা, খেজুরি: পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি ২ ব্লকের পশ্চিম ভাঙ্গনমারি গ্রামে মহরম (Muharram) উপলক্ষে আয়োজিত নৃত্য অনুষ্ঠানে দু’জন সাধারণ মানুষের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গেছে। মৃতরা হলেন পূর্ব ভাঙ্গনমারি গ্রামের বাসিন্দা সুজিত দাস (২৩) এবং ঝাঁটিহারি গ্রামের সুধীর চন্দ্র পাইপ (৬৫)।

সূত্রের খবর, রাত প্রায় ২টো নাগাদ চলছিল মহরম (Muharram) উপলক্ষে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেই সময় রক্তাক্ত অবস্থায় সুজিত ও সুধীরবাবুকে উদ্ধার করে স্থানীয় জনকা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ও মুখে রক্ত থাকার বিষয়টি সন্দেহজনক বলে দাবি করছে মৃতদের পরিবার ও বিজেপি নেতৃত্ব।

   

ঘটনার পর শনিবার সকালে খেজুরি গিয়ে নিহত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মৃতদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে তিনি দাবি করেন, “এটি পরিকল্পিত খুন। যারা এই কাজ করেছে, তারা তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী। যতক্ষণ না দোষীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, ততক্ষণ আন্দোলন চলবে।”

শুভেন্দু অধিকারী আরও জানান, “সরকারি হাসপাতালে ময়নাতদন্তে আমাদের বিশ্বাস নেই। আমরা চাই কেন্দ্রীয় চিকিৎসক দল দিয়ে তদন্ত হোক। খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। সোমবার খেজুরিতে বনধ ডাকা হয়েছে, আমি নিজে মিছিলে অংশ নেব।”

রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে আস্থাহীনতার কথা জানিয়ে বিজেপির খেজুরি ২ নম্বর ব্লকের বিরোধী দলনেতা পবিত্র দাস বলেন, “মালদা, মুর্শিদাবাদের কায়দায় এবার খেজুরিতে দুই যুবককে খুন করা হয়েছে। রাজ্যের পুলিশ নিরপেক্ষভাবে কাজ করে না, তাই সিবিআই বা অন্য কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থার মাধ্যমে তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।”

Advertisements

তবে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করেছে। কাঁথি সংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি পীযূষ কান্তি পণ্ডা বলেন, “এই ঘটনায় তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন রাজনৈতিক চক্রান্ত হচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করছে, দোষী যে-ই হোক না কেন, শাস্তি পাবেই।”

খেজুরি থানার ওসি প্রলয় চন্দ্র জানান, “ঘটনার তদন্ত চলছে। এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। ময়না তদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করে বলা যাবে না।”

এই ঘটনার পর এলাকাজুড়ে ছড়িয়েছে উত্তেজনা। গ্রামে চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। মৃতদেহ দুটি শনিবার থানায় এনে, পরে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। এদিকে, সোমবার খেজুরিতে বনধ সফল করতে কোমর বেঁধে মাঠে নামছে বিজেপি নেতৃত্ব। শুভেন্দু অধিকারী নিজে মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন বলে জানিয়েছেন। এখন দেখার বিষয়, তদন্তে কী উঠে আসে এবং রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশ কী পদক্ষেপ নেয় এই ঘটনায়।