বড়মার মন্দিরে ফলের পাহাড়, ১৫ হাজার কেজি প্রসাদ গেল (Prasad Distribution) হাসপাতাল-বৃদ্ধাশ্রমে। কালীপুজো উপলক্ষে নৈহাটির বড়মা মন্দিরে (boro Maa Temple) ভক্তদের উৎসাহ এবং প্রীতি লক্ষ্যণীয়। লক্ষ-লক্ষ ভক্ত নানা ধরনের ফল দেবীর কাছে অর্পণ করেছেন, যার ফলে শুক্রবার পর্যন্ত জমা ফলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫ হাজার কেজি। এই বিপুল পরিমাণ ফল শনিবার শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বৃদ্ধাশ্রমে বিতরণ করা হয়েছে।
পুজো কমিটি জানিয়েছে, প্রসাদের ফল ছাড়া প্রায় ৪ হাজার কেজি প্রসাদ ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। হাসপাতালগুলোর মধ্যে নৈহাটি শহরের হাসপাতাল, কল্যাণী হাসপাতাল এবং গঙ্গার ওপারে চুঁচুড়ার হাসপাতালগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। শুধু চিকিৎসা কেন্দ্র নয়, এই ফল বিতরণ হয়েছে এলাকার বৃদ্ধাশ্রম এবং অনাথ আশ্রমেও, যা সমাজের প্রতি একটি মানবিক বার্তা দেয়।
বড়মার প্রতি ভক্তদের শ্রদ্ধা ও আবেগের প্রতীক হিসেবে এই ফলের অর্পণ সারা বছর ধরে থাকে। বুধবার বড়মাকে গয়না পরানোর দিন থেকেই ভক্তদের ভিড় বাড়তে শুরু করে। নৈহাটি রেল স্টেশন সংলগ্ন অরবিন্দ রোডে ভক্তদের স্রোত চোখে পড়ার মত ছিল। শনিবার রাত পর্যন্ত জনজোয়ার অব্যাহত ছিল। এই বছরও অন্যান্য বছরের মতোই বিসর্জনে বিপুল সংখ্যক ভক্তের সমাগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আজ সোমবার বিকেল চারটের সময় বড়মার নিরঞ্জন হবে। পুলিশ ও প্রশাসন ইতিমধ্যে এই অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে ভক্তদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। ডিসি নর্থ গণেশ বিশ্বাস জানিয়েছেন, “নিরঞ্জন সম্পন্ন করতে গত বছরের মতোই ব্যবস্থা থাকবে। তবে এবার আরও বেশি সংখ্যায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে।”
বড়মা মন্দিরে ভক্তদের আগমন এবং পুজোর আনন্দ যেন কিছুটা বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে এই বছর ফলের বিতরণের উদ্যোগ সমাজের দুর্বল ও অসহায় মানুষের জন্য আশার আলো হয়ে উঠেছে। হাসপাতাল এবং বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে এই ফল পৌঁছানোর ফলে সেখানে থাকা মানুষগুলোও কিছুটা আনন্দ ও ভালোবাসা পায়।
এটি সত্যিই একটি উদাহরণ যে কিভাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে শুধু পূজা-অর্চনা নয়, বরং মানুষের সেবাও করা যেতে পারে। বড়মার প্রতি ভক্তদের এই শ্রদ্ধা ও সেবা মানবিকতার এক অসাধারণ উদাহরণ স্থাপন করেছে। ধর্মীয় উৎসবের মাধ্যমে সমাজে মানবিক সম্পর্কের যে উষ্ণতা তৈরি হয়, তা আসলে আমাদের সত্যিকারের সম্পদ। নৈহাটির বড়মার প্রতি ভক্তদের এই আবেগ ও শ্রদ্ধা শুধু তাদের ব্যক্তিগত জীবনেই নয়, বরং সমাজের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে পড়ুক, এই আশাই সকলের।