মিলন পণ্ডা, এগরা: বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় অবস্থিত এক্সিস ব্যাঙ্ক (Bank) শাখার সামনে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একাধিক গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ‘অজ্ঞাত’ কারণে টাকা গায়েব হয়ে যাওয়ার অভিযোগে তীব্র বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে এগরা থানার পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক্সিস ব্যাঙ্কের (Bank) এগরা শাখায় কয়েকজন গ্রাহক সম্প্রতি তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকার অস্বাভাবিক কাটছাঁট লক্ষ্য করেন। কেউ খেয়াল করেন টাকা হঠাৎ করে কেটে নেওয়া হয়েছে, আবার কারও ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে অ্যাকাউন্ট সম্পূর্ণ খালি হয়ে গিয়ে মাইনাস ব্যালান্স দেখাচ্ছে। এই ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে যখন গ্রাহকেরা ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তখন সঠিক উত্তর না পাওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
একাধিক অভিযোগ সত্ত্বেও ব্রাঞ্চ ম্যানেজার স্পষ্টভাবে কিছুই জানাতে পারেননি। কখনো বলা হয়, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গাইডলাইন অনুযায়ী টাকা আটকে রাখা হয়েছে, আবার কখনও বলা হয় সাইবার ফ্রড বা অনলাইন প্রতারণার অভিযোগে টাকা ডেবিট হয়েছে।
কিন্তু সমস্যার প্রকৃত উৎস সম্পর্কে কোনও ডকুমেন্টেড বা লিখিত ব্যাখ্যা দেননি ম্যানেজার।
তিনি বলেন, “আমরা এই বিষয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানাবেন। তবে কিছু অ্যাকাউন্টে অনলাইন প্রতারণা সংক্রান্ত কারণে টাকা আটকে রাখা হয়েছে। হয়তো ইমেল গিয়েছে, কেউ দেখেননি।”
বিক্ষোভরত গ্রাহকদের মধ্যে একজন মুস্তাক খাঁ বলেন, “ম্যানেজার সৎভাবে বলতে পারলেন না কেন টাকা কাটা হয়েছে? একজন না, একাধিক গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হয়েছে। আমরা এগরা থানায় লিখিত অভিযোগ করব।”
আরও এক গ্রাহক বলেন, “আমি চিকিৎসার জন্য টাকা তুলতে গিয়েছিলাম, অথচ অ্যাকাউন্টে কিছুই নেই! বারবার এসে হয়রান হচ্ছি। এটা কি গ্রাহকের প্রতি অন্যায় নয়?” পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল যে এগরা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনীকে ডাকা হয়। তাঁদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
তবে গ্রাহকেরা জানিয়েছেন, সমস্যার দ্রুত সমাধান না হলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন। একাধিক গ্রাহক ইতিমধ্যেই থানায় লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বেসরকারি ব্যাংকিং পরিষেবায় গ্রাহকের স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা থাকা উচিত। কিন্তু এমন ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয়, অবিশ্বাস এবং ক্ষোভ তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের উচিত অবিলম্বে স্বচ্ছ তদন্ত করে সব গ্রাহককে জানানো কেন ও কীভাবে টাকা কাটা হয়েছে। অন্যথায়, এমন সমস্যা ভবিষ্যতে আরও বড় আকার নিতে পারে।