কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর বাড়ি থেকে টাকার পাহাড় উদ্ধার করেছিল ইডি৷ এই বিপুল পরিমাণ টাকা কোথা থেকে এল? এই টাকার মালিকই বা কে? অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দাবি ছিল, ওই টাকা তাঁর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হলেও, তিনি ওই টাকার মালিক নন৷ সবটাই পার্থ জানেন৷ কিন্তু, জানেন কী ভাবে এই বিপুল পরিমাণ টাকা সাদা করা হত? গোপন তথ্য ফাঁস করেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য৷ তাঁর দেওয়া বয়ানই চার্জশিটে তুলে ধরেছে ইডি৷ (Money laundering through trust)
পঞ্চম অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ Money laundering through trust
নিয়োগ মামলার পঞ্চম অতিরিক্ত চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসাবে নাম রয়েছে কল্যাণময়েরও৷ তিনিই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকদের জানিয়েছেন, বিভিন্ন সময় পার্থ বিভিন্ন ব্যক্তিকে নগদ অর্থ দিতেন৷ সেই অর্থ আবার পার্থর কাছেই ফিরে আসত তাঁর স্ত্রীর নামে চলা ট্রাস্টের মধ্যে দিয়ে৷ এক কথায় বলা যায়, বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ছিল নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম ‘আঁতুড়ঘর’৷
ডোনেশন-এর মাধ্যমে দুর্নীতি Money laundering through trust
বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট গড়ে উঠেছিল মূলত একটি পশুচিকিৎসালয় তৈরির উদ্দেশ্যে। ঠিক হয়েছিল পাটুলি এলাকায় ওই পশু হাসপাতালটি গড়ে তোলা হবে৷ ওই ট্রাস্টের অন্যতম ট্রাস্টি ছিলেন কল্যাণময় নিজেও৷ তিনি জানান, এক বার ১ কোটি ১৭ লক্ষ ৭৫ হাজার ৯১০ টাকা ‘ডোনেশন’ জমা পড়েছিল ট্রাস্টের কোষাগারে। একাধিক ব্যক্তি চেকের মাধ্যমে ওই টাকা ‘ডোনেশন’ দিয়েছিলেন। কিন্তু, গল্পটা ছিল অনেক গভীর৷ আদতে এই বিপুল অঙ্কের টাকা পার্থের কাছ থেকেই নগদে নিয়েছিলেন তাঁরা৷ যা চেকের মাধ্যমে সাদা হয়ে ট্রাস্টের অ্যাকাউন্টে ঢোকে৷ ২০১৯ সালে ওই টাকা দিয়ে ১৫ কাঠা জমি কেনা কেনেন পার্থ৷
বোটানিক্স অ্যাগ্রোটেক্স প্রাইভেট লিমিটেড গঠন Money laundering through trust
কল্যাণময় আরও জানান, প্রাক্তন মন্ত্রীর নির্দেশেই ২০১৭ সালে বোটানিক্স অ্যাগ্রোটেক্স প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থা খোলা হয়েছে। যার মাথায় বসানো হয়েছি কল্যাণময়কে৷ ওই সংস্থার মধ্যে দিয়ে মাছ এবং ধানের ব্যবসা চলত। শুধু তাই নয়, জামাইয়ের নামে একাধিক সম্পত্তিও কিনেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী। কাগজে কলমে ওই টাকা দেখানো হয়েছিল ব্যবসায়িক লাভ হিসাবে৷ কল্যাণময়ের কথায়, তাঁর শ্বশুরমশাই তাঁকে ১৫ কোটি টাকা দিয়েছিলেন৷ যা দিয়ে বিসিএম ইন্টারন্যাশনাল স্কুল তৈরি করা হয়।
বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের একমাত্র কন্যা সোহিনী চট্টোপাধ্যায়। তবে চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসাবে তাঁর নাম উল্লেখ করেনি ইডি। স্বামী কল্যাণময়ের সঙ্গে এখন বিদেশে রয়েছেন সোহিনী। তাই চার্জশিট গঠনে কিছু সমস্যা হচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে৷
West Bengal: Recruitment scam: ED recovers cash from Partha Chatterjee’s associate’s house. Testimony reveals money laundering through trust. Updates on the investigation and role of Kalyanmay Bhattacharya.