নিউজ ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বৈঠক ভেস্তে দিল মোদী সরকার। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান উতোর। রাজ্যের উন্নতি হোক, এমনটা কোনওভাবেই হতে দিতে চায় না কেন্দ্র। এমনটাই অভিযোগ রাজ্যের শাসকদলের। সম্প্রতি ভারতে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত নিকোলাস ম্যাকাফের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা ছিল রাজ্যের মন্ত্রীসভার। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সবকিছুই নিয়ম মেনে হচ্ছিল। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে বৈঠকে বসার কথা ছিল রাজ্যের তিন মন্ত্রীর। কিন্তু শেষ মুহুর্তে বৈঠকে বসা যাবে না বলে রাজ্যকে জানিয়েছে বিদেশমন্ত্রক। তাঁদের দাবি, বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেশের কোনও রাজ্যের মন্ত্রীদের বৈঠক করার প্রটোকল নেই।
এদিকে বিদেশমন্ত্রকের এই যুক্তিকে মানতে নারাজ রাজ্য প্রশাসন। তাঁদের দাবি, রাজ্যের আর্থিক উন্নতি চায় না কেন্দ্র। তাই রাজ্যে আসুক বিদেশি বিনিয়োগ এমনটা ‘না পসন্দ’ মোদী সরকারের। দীর্ঘ দিন ধরেই কেন্দ্র একশ দিনের টাকা আটকে রেখেছে বলে দাবি করে আসছে রাজ্যে সরকার। গতবছর একশ দিনের বকেয়া টাকার দাবিতে ধর্মতলায় ধর্নাতেও বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি। এবার বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় বিদেশমন্ত্রককে রীতিমতো কাঠগড়ায় তুলল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সুন্দরবনের উন্নয়ন ও বিনিয়োগ নিয়েই অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসতেন রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও শশী পাঁজা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিদেশমন্ত্রকের হস্তক্ষেপে তা বানচাল হয়ে যায়। এদিন এই বিষয়টি তুলে ধরে কেন্দ্রকে বিঁধেছেন তৃণমূলের রাজ্য সভার সাংসদ সাকেত গোখলে ও সাগরিকা ঘোষ।
এর পেছনে কি উদ্দেশ্য কেন্দ্রের? রাজনৈতিক মহলের দাবি, শুধু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেই নয়, অতীতেও একাধিক অ-বিজেপি রাজ্যের সঙ্গেও এরকম আচরন করেছে মোদী সরকার। কিন্তু শুধুমাত্র গুজরাত, মহারাষ্ট্রের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যের বেলায় কোনওরকম প্রোটোকল বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। তাহলে একই দেশে বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে প্রোটোকলের অজুহাত কেন দেখাচ্ছে কেন্দ্র? তুলেছেন বিশ্লেষকেরা। এর আগেও অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বৈঠক ভেস্তে দিল মোদী সরকার। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জলঘোলা।
পেছনে কি উদ্দেশ্য কেন্দ্রের? রাজনৈতিকমহলের দাবি, শুধু পশ্চিমবঙ্গই নয়, বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যপারে দেশের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে দেশের একাধিক অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিকে। কিন্তু গুজরাত, মহারাষ্ট্রের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যের ক্ষেত্রে প্রোটোকল কোথায় ছিল?
এর আগেও বিদেশমন্ত্রকের বাধায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে ইংল্যন্ডে যেতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। সেবারও এই নিয়ে জলঘোলা হয়েছিল বিস্তর। এবার অসি-রাজ্য বৈঠক নিয়ে তরজা কোনদিকে গড়ায় সেটাই দেখার।