মমতার (Mamata) সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে (meeting) অর্থ কমিশন (Finance Commission)। ষোড়শ অর্থ কমিশনের প্রস্তুতি শুরু হওয়ায়, রাজ্যগুলির জন্য আগামী পাঁচ বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে অর্থের ভাগাভাগি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলে আসছে, এবং এই আলোচনা রাজ্যের জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দের কাঠামো নির্ধারণে একটি মূল স্তম্ভ হয়ে থাকে। এই বার্ষিক বরাদ্দ রাজ্যের উন্নয়ন প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন, সামাজিক কল্যাণ কর্মসূচি, এবং স্থানীয় প্রশাসনের কার্যক্রমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আগামী ডিসেম্বর মাসে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে ষোড়শ অর্থ কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যা বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বৈঠকটি হবে ৩ ডিসেম্বর, নবান্নে, যেখানে রাজ্যের শীর্ষ কর্মকর্তারা যেমন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, অর্থসচিব প্রভাত মিশ্রসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। এর আগে, ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর অরবিন্দ পানাগড়িয়ার নেতৃত্বে ষোড়শ অর্থ কমিশন গঠিত হয়েছে, যা পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দের নীতিমালা নির্ধারণ করবে। কমিশন তার কার্যক্রম শুরু করার আগে রাজ্যের বিভিন্ন সমস্যার গভীরে গিয়ে প্রতিটি চাহিদা খতিয়ে দেখবে, যাতে বরাদ্দের পরিমাণ ঠিকভাবে নির্ধারণ করা যায়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অর্থ কমিশন রাজ্যের জনসংখ্যা, আয়তন, আর্থিক গতিবিধি, কর ব্যবস্থাপনা, এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক সূচকের ভিত্তিতে রাজ্যগুলির জন্য বরাদ্দের পরিমাণ চূড়ান্ত করবে। রাজ্যের প্রতিটি অঞ্চলের আর্থিক সমস্যা ও তার সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হবে, এবং এর ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় অনুদান, স্থানীয় প্রশাসন, পঞ্চায়েত-পুরসভা, এবং গ্রামীণ উন্নয়নসহ নানা ক্ষেত্রে বরাদ্দ নির্ধারণ হবে। এর মধ্যে বিশেষভাবে গুরুত্ব পাবে গ্রামীণ পরিকাঠামো, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, এবং বিপর্যয় মোকাবিলা।
এছাড়া, যখন কেন্দ্রের বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্পের বরাদ্দ স্থগিত বা কাটছাঁট হয়েছে, তখন এই অর্থ কমিশনের সিদ্ধান্ত রাজ্যের জন্য একটি বড় ধরনের সুযোগ তৈরি করতে পারে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প যেমন একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনাসহ অন্যান্য উন্নয়নমূলক কর্মসূচি, যেগুলোর উপর নির্ভরশীল কোটি কোটি মানুষ, তাদের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দের বিষয়টি এই বৈঠকে গুরুত্ব পাবে।
এই বৈঠকটি শুধু রাজ্যগুলির অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য নয়, বরং তাদের সামাজিক সমতা এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। অর্থ কমিশন বরাদ্দের ভিত্তিতে, রাজ্যগুলি তাদের উন্নয়ন পরিকল্পনা গুছিয়ে নিতে পারবে এবং পরবর্তী পাঁচ বছর এই বরাদ্দের মাধ্যমে এক নতুন দিশায় এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে।
এমন এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, যখন রাজ্যগুলির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন, এই বৈঠকটি কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে। অর্থ বরাদ্দের সঠিক ভাগাভাগি নিশ্চিত করা হলে, রাজ্যগুলি নিজেদের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে আরও সক্ষম হবে এবং দেশের সামগ্রিক আর্থিক উন্নয়নেও সাহায্য করবে।