পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর ব্লকের ৪ নম্বর গোলড় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মঞ্জু দলবেরা (Manju Dalbera) পঞ্চায়েতে অসাধারণ কাজের জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন। বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫, জেলাশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জেলাশাসক খুরশেদ আলী কাদরী নিজে মঞ্জু দলবেরার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন। এই পুরস্কার শুধুমাত্র তাঁর ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূরদৃষ্টি ও নেতৃত্বের প্রতিফলন। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্জু দলবেরাকে তাঁর পছন্দের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছিলেন এবং তিনি সেই ভরসার মর্যাদা রক্ষা করেছেন।
২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে কেশপুরের আনন্দপুর স্কুল মাঠে এক জনসভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত হয়েছিলেন। সেই সমাবেশের মঞ্চ থেকে তিনি মঞ্জু দলবেরাকে মঞ্চে ডেকে তুলে বলেছিলেন, “এরাই হচ্ছেন আগামী দিনের কেশপুরের সৎ ও একনিষ্ঠ তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী এবং পঞ্চায়েতে মানুষের সেবক।” অভিষেকের এই ঘোষণা শুধু দলীয় কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ সঞ্চার করেনি, বরং স্থানীয় মানুষের মধ্যেও এক নতুন আশার সঞ্চার করেছিল। সেই নির্বাচনে মঞ্জু দলবেরা কেশপুর ব্লকের ৪ নম্বর গোলড় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হন এবং তারপর থেকে তিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মঞ্জু দলবেরা পঞ্চায়েতের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পকে সফলভাবে রূপায়ণ করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে গোলড় গ্রাম পঞ্চায়েত কেশপুর ব্লকের মধ্যে এক নম্বর পঞ্চায়েত হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এছাড়াও, ফিফটিন ফিনান্স কমিশনের কাজকে দক্ষতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করার জন্য তাঁর পঞ্চায়েত জেলা স্তরে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে। এই সাফল্য শুধুমাত্র প্রশাসনিক দক্ষতার পরিচয় নয়, বরং মানুষের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম সেবার মনোভাবের প্রমাণ। সরকারি প্রকল্পগুলোকে গ্রামের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।
বুধবার জেলাশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মঞ্জু দলবেরার হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এই অনুষ্ঠানে কেশপুর ছাড়াও গড়বেতা, কেশিয়াড়ি, খড়গপুর, দাঁতন ও মোহনপুর ব্লকের অন্যান্য গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানদেরও পুরস্কৃত করা হয়। তবে মঞ্জু দলবেরার সাফল্য আলাদাভাবে আলোচনায় এসেছে কারণ তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রত্যক্ষ সমর্থন ও ভরসার প্রতীক। পুরস্কার গ্রহণের পর মঞ্জু দলবেরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার উপর যে বিশ্বাস ও ভরসা রেখেছেন, আমি তার পূর্ণ মর্যাদা রাখার চেষ্টা করেছি। এই পুরস্কার আমার কাছে শুধু সম্মান নয়, আরও ভালো কাজ করার প্রেরণা।”
মঞ্জু দলবেরা আরও জানান, তিনি আগামী দিনে আরও বেশি মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চান। তিনি জেলাশাসক ও সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন যাতে গোলড় গ্রাম পঞ্চায়েতকে আরও বেশি ফান্ড দেওয়া হয়। তাঁর কথায়, “আমি চাই আমার পঞ্চায়েত আরও উন্নতি করুক। মানুষের জন্য আরও বেশি কাজ করতে পারলে আমি সত্যিই খুশি হব। সরকারের সাহায্য পেলে আমরা আরও অনেক কিছু করতে পারব।” তাঁর এই আবেদন স্থানীয় মানুষের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা ও কর্মপ্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
এই ঘটনা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বের দক্ষতাকেও তুলে ধরেছে। তিনি যে শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা নন, বরং দলের কর্মীদের মধ্যে সঠিক প্রতিভা চিহ্নিত করে তাদের উৎসাহিত করতে পারেন, তার প্রমাণ মঞ্জু দলবেরার সাফল্য। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচারে অভিষেকের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তিনি গ্রামীণ স্তরে দলের সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য নিরলস পরিশ্রম করেছিলেন এবং মঞ্জু দলবেরার মতো নিষ্ঠাবান কর্মীদের সামনে এনেছিলেন।
স্থানীয় মানুষের মতে, মঞ্জু দলবেরার নেতৃত্বে গোলড় গ্রাম পঞ্চায়েতে উন্নয়নের হাওয়া লেগেছে। রাস্তাঘাট, পানীয় জল, স্বাস্থ্য পরিষেবা ও শিক্ষার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কাজ হয়েছে। ফিফটিন ফিনান্সের তহবিলের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে পঞ্চায়েতের অবকাঠামো উন্নত করা হয়েছে, যা জেলা স্তরে পঞ্চম স্থান অর্জনের পিছনে বড় ভূমিকা পালন করেছে। এই সাফল্য কেশপুরের অন্যান্য পঞ্চায়েতের জন্যও একটি উদাহরণ হয়ে উঠেছে।
এদিনের অনুষ্ঠানে জেলাশাসক খুরশেদ আলী কাদরী জানান, “গ্রাম পঞ্চায়েতগুলোই আমাদের উন্নয়নের মূল ভিত্তি। মঞ্জু দলবেরার মতো প্রধানরা যে কাজ করছেন, তা আমাদের গর্বের বিষয়।” তিনি আরও বলেন, সরকার গ্রামীণ উন্নয়নে বিশেষ জোর দিচ্ছে এবং ভালো কাজের জন্য পুরস্কার প্রদান এই প্রক্রিয়ার একটি অংশ।
মঞ্জু দলবেরার এই পুরস্কার প্রাপ্তি কেশপুরের মানুষের মধ্যে উৎসাহের সঞ্চার করেছে। তাঁরা মনে করছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এবং মঞ্জু দলবেরার মতো প্রধানদের পরিশ্রমে গ্রামীণ বাংলার উন্নয়ন আরও গতি পাবে। এই স্বীকৃতি আগামী দিনে গোলড় গ্রাম পঞ্চায়েতকে আরও বড় সাফল্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।