কেষ্টাতেই ‘ভর’ করে বীরভূমের কোর কমিটি গড়ল মমতা

২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে ফের পুরনো ভরসাতেই ফিরলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গরু পাচার মামলায় দীর্ঘদিন জেলবন্দি থাকার পর বীরভূমে ফিরে আবারও দলের গুরুত্বপূর্ণ…

কেষ্টাতেই ‘ভর’ করে বীরভূমের কোর কমিটি গড়ল মমতা

২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে ফের পুরনো ভরসাতেই ফিরলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গরু পাচার মামলায় দীর্ঘদিন জেলবন্দি থাকার পর বীরভূমে ফিরে আবারও দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে ফিরলেন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। সোমবার বোলপুরে কোর কমিটির বৈঠকে তাঁকে আহ্বায়ক বা কনভেনরের পদে বসানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে বীরভূমের রাজনৈতিক মানচিত্রে বড় বার্তা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সূত্রের খবর, কোর কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের শীর্ষ নেতারা, যার মধ্যে ছিলেন রাজ্যের কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বিধানসভার উপাধ্যক্ষ আশিষ বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়, অসিত মাল, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম, বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, অভিজিৎ সিংহ, কাজল শেখ, সুদীপ্ত ঘোষ প্রমুখ।

   

এই বৈঠকে একাধিক সাংগঠনিক এবং রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়। তবে কেন্দ্রবিন্দু ছিল অনুব্রত মণ্ডলকে ফের কোর কমিটির কনভেনর হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া। জানা গিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে সবাইকে একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার বার্তা দেন। তিনি বলেন, “এখন দলকে শক্তিশালী করার সময়। একসঙ্গে কাজ করলে তবেই বীরভূমে পুনরায় সাফল্য আসবে।”

এছাড়াও খবর, আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব আরও সুসংহত করতে কোর কমিটিতে শীঘ্রই যুক্ত করা হবে আদিবাসী নেতা রবি মুর্মুকে। তবে সেই ঘোষণা করা হবে কলকাতা থেকে। এই পদক্ষেপ দলীয় সংহতি বজায় রাখতে এবং আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ককে আরও সক্রিয় করতে তৃণমূলের কৌশলের অংশ বলেই মনে করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, অনুব্রত মণ্ডল ২০২২ সালে গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হন। তারপর থেকে বীরভূমে দলের দায়িত্ব সামলাতে গঠিত হয় কোর কমিটি। যদিও কেষ্টর প্রভাব এলাকার রাজনীতিতে বরাবরই অনুভূত হয়েছে। তাঁর অনুপস্থিতিতেও এলাকার বহু রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাঁকে ঘিরেই আলোচনা হয়েছে।

Advertisements

তাঁর জেলমুক্তির পর থেকেই দল ফের তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিল। এবারে কোর কমিটির কনভেনরের দায়িত্ব দিয়ে সেই বার্তাই স্পষ্ট করে দিলেন দলনেত্রী। জেলা সভাপতির পদ এখনও শূন্য, ফলে আপাতত কোর কমিটির হাতেই বীরভূমের দায়িত্ব থাকছে।

ভাষা আন্দোলন-সহ একাধিক কর্মসূচি নিয়ে বর্তমানে বীরভূমে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি চাইছেন, বীরভূমে পুরনো জমি ফিরে পাক দল। আর সেই লক্ষ্যেই অনুব্রত মণ্ডলের উপর আস্থা রাখলেন তৃণমূল নেত্রী।

এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে বীরভূমে নির্বাচনের আগে তৃণমূলের ভিত মজবুত করবে, তবে বিরোধীরা ইতিমধ্যেই এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে। তাঁদের বক্তব্য, যিনি এখনো তদন্তের মুখে, তাঁকেই ফের দায়িত্ব দিয়ে তৃণমূল প্রমাণ করল—দলের পুরনো পন্থা থেকেই তারা সরেনি।

তবে তৃণমূল বলছে, সংগঠন শক্তিশালী করতে, এবং মাঠপর্যায়ে বাস্তব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নেতার নেতৃত্বে কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে অনুব্রতের বিকল্প নেই।