উল্টো রথ-মহরম শান্তিপূর্ণ করতে নবান্নে মমতার বৈঠক

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata) আজ নবান্নতে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন, যেখানে আসন্ন উল্টো রথযাত্রা, শ্রাবণী মেলা এবং মহরমের মিছিলের প্রস্তুতি পর্যালোচনা করা হয়।…

Mamata meeting at nabanna

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata) আজ নবান্নতে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন, যেখানে আসন্ন উল্টো রথযাত্রা, শ্রাবণী মেলা এবং মহরমের মিছিলের প্রস্তুতি পর্যালোচনা করা হয়। এই বৈঠকে রাজ্যের মন্ত্রী, পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং প্রশাসনিক আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।

মুখ্যমন্ত্রী (Mamata) নির্দেশ দিয়েছেন যে, এই উৎসবগুলি শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের সব রকম প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে হবে। এই ঘটনা রাজ্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি এবং প্রশাসনিক দক্ষতার প্রতি তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে।

   

উল্টো রথযাত্রার প্রস্তুতি

উল্টো রথযাত্রা, যা রথযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার মাসির বাড়ি থেকে মূল মন্দিরে ফিরে আসার উৎসব।

মুখ্যমন্ত্রী (Mamata) নির্দেশ দিয়েছেন যে, দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে এই উৎসবের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। গত ২৬ জুন দিঘায় রথযাত্রার প্রস্তুতি পরিদর্শনের সময় মমতা ১ কিলোমিটার দীর্ঘ রথের পথ পরিদর্শন করেছিলেন এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যারিকেডের ব্যবস্থা নির্দেশ দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, “উল্টো রথযাত্রার সময় রাস্তায় কোনো বিশৃঙ্খলা যেন না হয়, সেজন্য পুলিশকে সতর্ক থাকতে হবে।” দিঘায় প্রায় ৩,০০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং ভক্তদের নিরাপত্তার জন্য রথের দড়ি ব্যারিকেডের কাছে প্রসারিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শ্রাবণী মেলার ব্যবস্থা

শ্রাবণী মেলা, যা শ্রাবণ মাসে শিবের পূজার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি বড় ধর্মীয় উৎসব, রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে পুরোহিত ও ভক্তদের সমাগম ঘটায়। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যে, শ্রাবণী মেলায় ভিড় নিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা এবং জনসাধারণের সুবিধার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। (Mamata) তিনি বলেন, “মানুষের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি সম্মান রেখে আমাদের শান্তি বজায় রাখতে হবে।” প্রশাসনকে মেলার স্থানে পরিচ্ছন্নতা, পানীয় জল এবং চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisements

মহরমের মিছিলের প্রস্তুতি

মহরমের (Mamata) মিছিল, যা শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান, রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় শোকের সঙ্গে পালিত হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোর দিয়েছেন যে, মিছিলের সময় কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা এড়াতে হবে। তিনি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন, মিছিলের পথে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলার ঐতিহ্য হলো সব ধর্মের মানুষের একসঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালন। আমরা সেই ঐতিহ্য বজায় রাখব।”

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

এই প্রস্তুতি পর্যালোচনার মধ্যে রাজনৈতিক বিতর্কও উঠেছে। বিজেপি নেতা সুবেন্দু অধিকারী দিঘার জগন্নাথ মন্দিরকে “সাংস্কৃতিক কেন্দ্র” হিসেবে অভিহিত করে মমতার উৎসবের প্রচেষ্টাকে “হিন্দু ভোট পাওয়ার কৌশল” বলে সমালোচনা করেছেন।

তৃণমূলের (Mamata) পক্ষ থেকে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলা হয়েছে, মমতা সব ধর্মের প্রতি সমান সম্মান প্রদর্শন করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ধর্মের নামে রাজনীতি করা উচিত নয়। আমরা সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে উৎসব পালন করি।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata) নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গ সরকার উল্টো রথযাত্রা, শ্রাবণী মেলা এবং মহরমের মিছিল শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রশাসনের প্রস্তুতি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাজ্যের ধর্মীয় সম্প্রীতির ঐতিহ্যকে আরও শক্তিশালী করবে। এই বৈঠকের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে, বাংলায় শান্তি ও ঐক্য বজায় রাখা তাঁর সরকারের প্রধান লক্ষ্য।