বাংলা ভাষার উপর আঘাতের প্রতিবাদে (Language Movement March) আজ, সোমবার (২৮ জুলাই) বোলপুরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বৃহত্তর ভাষা আন্দোলনের পদযাত্রা। “ভাষা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলাভাষী এক হব এক হব” এই স্লোগানকে সামনে রেখেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদের ঢেউ। এই কর্মসূচির মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঙালির অস্তিত্বের লড়াইকে সামনে রেখে এদিনের মিছিলে বহু প্রতীকী বার্তা ও সাংস্কৃতিক উপস্থাপনা থাকছে।
দুপুর আড়াইটে নাগাদ ট্যুরিস্ট লজ মোড় থেকে শুরু হবে পদযাত্রা। মিছিল এগোবে চিত্রা মোড়, চৌরাস্তা হয়ে শ্রীনিকেতন রোড ধরে এবং শেষ হবে জামবুনি বাসস্ট্যান্ড মোড়ে। আনুমানিক আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ এই পদযাত্রায় থাকবে ১২টি জায়ান্ট স্ক্রিন এবং ২৮টি টোটো। শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথে থাকবে ২২টি গেট এবং প্রত্যেকটিতে অবস্থান করবেন একজন করে কাউন্সিলর। তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে তৈরি করা হচ্ছে ট্যাবলো, যাতে তুলে ধরা হবে বাংলার সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য।
মিছিলের সূচনা হবে হরিনাম সংকীর্তনের দল দিয়ে। অংশ নেবেন ছৌ নৃত্যশিল্পীরা, বিভিন্ন খেলোয়াড়, আদিবাসী সম্প্রদায় ও মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। পদযাত্রার একেবারে শেষে থাকবেন তৃণমূলের সাধারণ কর্মী ও সমর্থকরা। মিছিল চলাকালীন সাউন্ড সিস্টেমে বাজবে দেশাত্মবোধক গান— ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’, ‘আগুনের পরশমণি’, ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা’, ‘আমি বাংলায় গান গাই’— যা বাঙালির আবেগকে উসকে দেবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বীরভূম জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আশিষ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই কর্মসূচিতে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের জমায়েত হবে বলে আশাবাদী তাঁরা। রবিবার সন্ধ্যায়ই মুখ্যমন্ত্রী বোলপুরে পৌঁছে যান এবং আজকের মিছিল ও প্রশাসনিক বৈঠকের প্রস্তুতি নিয়ে একাধিক বৈঠক করেন।
মিছিলের আগে বেলা ১২টায় বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে হবে প্রশাসনিক বৈঠক।জেলা উন্নয়ন ও সরকারি পরিষেবা সংক্রান্ত খতিয়ান তুলে ধরা হবে এই সভায়। পরের দিন, মঙ্গলবার ২৯ জুলাই, ইলামবাজারে হবে আরেকটি প্রশাসনিক সভা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অজয় নদের উপর নতুন নির্মিত ১৩৮ কোটি টাকার সেতু (বীরভূম-পশ্চিম বর্ধমান সংযোগকারী) উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। ডেউচা-পাচামি কয়লাখনিতে জমিদাতা পরিবারগুলির সদস্যদের হাতে গ্রুপ D এবং জুনিয়র কনস্টেবলের চাকরির নিয়োগপত্রও তুলে দেবেন তিনি। কৃষকদের জন্য থাকছে কৃষি সরঞ্জাম বিতরণেরও ব্যবস্থা।
এই ভাষা আন্দোলন পদযাত্রা কেবল এক রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, বরং তা বাঙালি জাতিসত্তার উপর হামলার বিরুদ্ধে এক সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ। মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে এই মিছিল বাংলা ও বাঙালির সম্মান রক্ষার বার্তা দেবে— এমনটাই আশা করছে তৃণমূল নেতৃত্ব।