কলকাতা ১৭, সেপ্টেম্বর: আবারও চমক দিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার (Mamata Government)। সেই চমক হয়তো বাংলার জন্য খুব একটা সুফল দেবে না বরং বলা ভালো সরকার নতুন করে আরও এক বিষ বৃক্ষের জন্ম দিল। সেই জ্যোতি বসুর আমল থেকে অর্থাৎ ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাকে শিল্পে সুসজ্জিত করবার জন্য একটি ইন্সেন্টিভ প্যাকেজ চালু ছিল। এই ইন্সেন্টিভ প্যাকেজ চালু করা হয়েছিল মূলত বাংলাকে শিল্পের গন্তব্য হিসেবে তৈরী করতে।
সম্প্রতি রাজ্য সরকার এই প্যাকেজ আইন করে বন্ধ করে দিয়েছে। শুধু বন্ধ করে নয় সরকার স্পষ্ট বলেছে এই প্যাকেজের মাধ্যমে বকেয়া টাকা যে সংস্থাগুলি পেত, তা আর পাবে না। এই বিলটি গত মার্চ মাসে বিধানসভায় পাস হয়ে ২ এপ্রিল গভর্নরের সম্মতি পাওয়ার পর জারি করা হয়। বেগতিক দেখে আলট্রাটেক সিমেন্ট, ইলেকট্রোস্টিল কাস্টিং লিমিটেড, গ্রাসিম ইন্ডাস্ট্রিজ, নুভোকো ভিস্তাস এবং ডালমিয়া সিমেন্টের মতো একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান হাইকোর্টে একটি মামলা রুজু করেছে।
যদিও এই শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলি আলাদা আলাদা ভাবে মামলা করেছে। তবুও কলকাতা হাইকোর্ট আগামী ৭ নভেম্বর এই মামলার শুনানির জন্য ধার্য করেছে। এই শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলি অভিযোগ করেছে এই ধরণের আইন সম্পূর্ণভাবে সংবিধান বিরোধী। কিন্তু রাজ্যসরকার এই বিলে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। তারা বলেছে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে অর্থ না দিয়ে তা প্রান্তিক মানুষদের হাতে তুলে দিলে সবচেয়ে বেশি ভালো হবে।
বিলে আরও বলা হয়েছে, সরকার “পশ্চিমবঙ্গের শিল্প ইউনিটগুলোকে আর পশ্চিমবঙ্গ ইসেন্টিভ স্কিম এবং অনুদানের বাধ্যবাধকতার আওতায় রাখবে না। সরকার আরও বলেছে কোনো চুক্তি, প্রতিশ্রুতি বা রাজ্যের আইনের অধীনে আগের কোনো বকেয়া টাকা , আর্থিক সুবিধা, রাষ্ট্রীয় সমর্থন, ভর্তুকি, সুদ মওকুফ, শুল্ক, ফেরত বা কর ছাড়, কর প্রণোদনা, অগ্রিম বা অন্য কোনো প্রকার শিল্প প্রচারমূলক সহায়তা পাবে না।”
তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই সিদ্ধান্তে কার্যত ক্ষোভে ফুঁসছে শিল্প সংস্থাগুলি। আল্ট্রাটেকের মতো সংস্থা বলেছে আমরা আগের ইন্সেন্টিভ দেখে রাজ্যে বিনিয়োগ করেছিলাম কিন্তু সরকার যে আইন এনেছে তা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। ডালমিয়া সিমেন্টের আইনজীবী আদালতে যুক্তি দিয়েছেন যে, এই আইন চুক্তির স্বাধীনতা এবং সম্পত্তির অধিকার লঙ্ঘন করে।
যা ভারতীয় সংবিধানের ১৪ এবং ১৯ অনুচ্ছেদের বিরুদ্ধে। এছাড়া, শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর মতে, ইনসেনটিভ প্যাকেজ প্রত্যাহার করা তাদের আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলবে, কারণ তারা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ভিত্তিতে কারখানা স্থাপন করেছিল। এমত অবস্থায় বাংলার রাজনৈতিক মহল সরব হয়েছে তাদের একাংশের মতে এই সিদ্ধান্ত সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রমান।
বৃথা লড়াই, আল-জাওরার কাছে পরাজিত হয়ে এসিএল শুরু করল গোয়া
আবার অনেকেই সরকারের এই সিদ্ধান্তকে মাথায় রেখে বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী সবসময় বলেন টাটা জিন্দালদের কথা। তারা এসে বাংলায় শিল্প করবে কিন্তু এই সিদ্ধান্তের পরে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলির আর কোনও নিরাপত্তা নেই। এবং কার্যত বাংলায় শিল্পের সমস্ত সুযোগ শেষ হয়ে গেল।