নীতি আয়োগে প্রশংসিত কর্মসংস্থান দাবি মমতার, কটাক্ষ বিরোধীদের

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata) আজ নীতি আয়োগের একটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করে দাবি করেছেন, রাজ্যের কর্মসংস্থান ও সামাজিক-অর্থনৈতিক সূচকে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তিনি তাঁর…

Mamata niti ayog

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata) আজ নীতি আয়োগের একটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করে দাবি করেছেন, রাজ্যের কর্মসংস্থান ও সামাজিক-অর্থনৈতিক সূচকে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তিনি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “নীতি আয়োগ আনুষ্ঠানিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন সামাজিক-অর্থনৈতিক সূচকে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি দিয়েছে।”

তবে, (Mamata)এই দাবির প্রতিক্রিয়ায় বিরোধী দল, বিশেষত ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), তীব্র কটাক্ষ করে প্রশ্ন তুলেছে, “যদি বাংলায় এত কর্মসংস্থান হয়, তবে কেন হাজার হাজার তরুণ প্রতিভা অন্য রাজ্যে চাকরির জন্য পাড়ি দিচ্ছে? কেন এত বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিক ভিন রাজ্যে?” বিরোধীরা আরও অভিযোগ করেছে, তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের আমলে ‘চাকরি চুরি’র ঘটনা বেড়েছে, যার ফলে প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষক আজ রাস্তায় আন্দোলন করছেন।

   

নীতি আয়োগের (Mamata)সাম্প্রতিক ‘সামারি রিপোর্ট ফর দি স্টেট অব ওয়েস্ট বেঙ্গল’ অনুযায়ী, ২০২২-২৩ সালে পশ্চিমবঙ্গের বার্ষিক বেকারত্বের হার ছিল মাত্র ২.২%, যা জাতীয় গড় ৩.২%-এর তুলনায় ৩০% কম। এছাড়া, রাজ্যের সামাজিক-অর্থনৈতিক সূচকগুলির মধ্যে সাক্ষরতার হার ৭৬.৩% (জাতীয় গড় ৭৩%), গড় আয়ু ৭২.৩ বছর।

লিঙ্গানুপাত ৯৭৩ (জাতীয় গড় ৮৮৯), শিশু মৃত্যুহার ১৯ (প্রতি ১,০০০ জন্মে), এবং মোট উর্বরতার হার ১.৬ (জাতীয় গড়ের চেয়ে কম) উল্লেখযোগ্যভাবে জাতীয় গড়কে ছাড়িয়ে গেছে। শিক্ষাক্ষেত্রেও বাংলা এগিয়ে, কারণ এখানে স্কুল ছাড়ের হার কম এবং দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পাসের হার জাতীয় গড়ের চেয়ে বেশি। গুণগত জীবনযাত্রার সূচকেও রাজ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে, যেমন পানীয় জলের প্রাপ্যতা জাতীয় গড়ের উপরে।

মমতা (Mamata) তাঁর পোস্টে বলেন, “এই অর্জনগুলি পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।” তিনি রাজ্যের এই সাফল্যকে তৃণমূল সরকারের নেতৃত্বের ফল হিসেবে তুলে ধরেন। তাঁর দলের সমর্থকরাও সামাজিক মাধ্যমে এই প্রতিবেদনের উল্লেখ করে দাবি করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলা উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

Advertisements

কিন্তু বিরোধী দল এই দাবিকে তীব্রভাবে সমালোচনা করেছে। (Mamata)তারা বলেছে “নীতি আয়োগের প্রতিবেদনে বাংলার বেকারত্ব কম বলা হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। লক্ষ লক্ষ তরুণ প্রতিভা বাংলা ছেড়ে গুজরাট, মহারাষ্ট্র, দিল্লির মতো রাজ্যে চাকরির জন্য যাচ্ছে। বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে।”

তারা আরও অভিযোগ করেছে, তৃণমূল সরকারের আমলে এসএসসি নিয়োগ কেলেঙ্কারির কারণে প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষক চাকরি হারিয়েছেন, যাঁরা আজ রাস্তায় আন্দোলন করছেন। তাঁদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নীতি আয়োগের এই প্রতিবেদন বাংলার উন্নয়নের ইতিবাচক দিক তুলে ধরলেও, চাকরি কেলেঙ্কারি এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের ইস্যু রাজ্য সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ।

Nabanna: নবান্ন বৈঠকের পরও সমাধান নেই, রাস্তাতেই লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি

বিরোধীদের অভিযোগ, (Mamata)তথ্যের সঠিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও, এই প্রতিবেদন তৃণমূলের জন্য রাজনৈতিকভাবে সুবিধাজনক। তবে, চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলন এবং তরুণদের অন্য রাজ্যে পাড়ি দেওয়ার প্রবণতা রাজ্যের কর্মসংস্থানের দাবির বিপরীতে প্রশ্ন তুলছে। এই বিতর্ক আগামী দিনে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।