কলকাতা: বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি, এমন দাগিয়ে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকারের এমন ভূমিকার বিরুদ্ধে ফের সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার কলকাতায় এক মিছিল থেকে বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে তিনি বলেন, “বিজেপি কি দেশের জমিদারি পেয়ে গিয়েছে? যাকে ইচ্ছা জেলে পাঠিয়ে দিচ্ছে। বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি বা রোহিঙ্গা বলে দিচ্ছে। বাংলাদেশ তো আলাদা দেশ, আর রোহিঙ্গারা তো মায়ানমারের নাগরিক। তাহলে আমাদের এখানে এসব কথা কেন?” (mamata banerjees protest rally)
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, পশ্চিমবঙ্গের যেসব নাগরিক দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাজ করতে যান, তাঁদের আধার, প্যান-সহ সব নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের ২২ লক্ষ বাংলার মজদুর রয়েছে। তাঁদের দিয়ে কাজ করাবে, আর বাংলায় কথা বললেই জেলে নিয়ে যাবে? ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠাবে? কেন? কোন অধিকারে? পশ্চিমবঙ্গ কি ভারতের অঙ্গ নয়?”
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দেন যে, তিনি অন্য ভাষাভাষী মানুষদের প্রতি পূর্ণ সম্মান রেখেই বলছেন, কিন্তু বাঙালিদের উপর অত্যাচার কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। “আমি প্রত্যেক ভারতীয়কে সম্মান করি। কিন্তু বাঙালিদের উপর অত্যাচার হলে, তার বিরুদ্ধে আমি সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দাঁড়াব,” বলেন তিনি।
সবচেয়ে বিস্ফোরক অভিযোগটি ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের একটি ‘গোপন’ নির্দেশিকা নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, “ভারত সরকার একটি নোটিফিকেশন করেছে। সেটি আমরা চ্যালেঞ্জ করব। লুকিয়ে লুকিয়ে সেই নোটিফিকেশন বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোতে পাঠিয়েছে। সেখানে পরিষ্কার বলা আছে— যাকেই সন্দেহ হবে, বাংলায় কথা বললে, তাকে অ্যারেস্ট করা হবে এবং ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হবে। আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেলেও সেই মানুষকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে!”
এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপিকে একহাত নিতে ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “আমি অত্যন্ত লজ্জিত, ব্যথিত, দুঃখিত ও মর্মাহত এই আচরণে। ভারতবর্ষের মাটিতে এমন বৈষম্য ও নির্লজ্জ আচরণ চলতে পারে না।”