আজ অর্থাৎ রবিবার বীরভূম জেলার বোলপুরে সফরে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee Visits Bolpur)। তাঁর সফরকে কেন্দ্র করে শহরজুড়ে উৎসবের আবহ, বিভিন্ন রাস্তাঘাটে দলীয় পতাকা ও ব্যানারে ঢাকা পড়েছে গোটা এলাকা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে শহরের প্রতিটি মোড়, ফ্লাইওভার, বিলবোর্ড ও পোস্টার স্পট।
তবে চোখে পড়ার মতো একটি বিষয় – শহরের কোনও এলাকায় নেই অনুব্রত মণ্ডলের ছবি। যিনি এতদিন বোলপুর তথা বীরভূমে তৃণমূলের ‘দাপুটে’ নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তাঁর অনুপস্থিতি যেন এক নীরব বার্তা দিচ্ছে দলীয় মহলে।
মমতার সফর ঘিরে নিরাপত্তা ও কর্মসূচি:
আজ বিকেল ৪টে নাগাদ বোলপুর স্টেডিয়ামে একটি দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন বলেও জানা গেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব, বিধায়ক এবং সাংসদদের একযোগে ডাকা হয়েছে মঞ্চে উপস্থিত থাকতে। বীরভূম জেলাজুড়ে থাকা হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক ইতিমধ্যেই বোলপুরে পৌঁছে গেছেন।
নিরাপত্তার খাতিরে গোটা শহরকে নজরদারিতে রেখেছে প্রশাসন। পুলিশ, বোম স্কোয়াড ও কুইক রেসপন্স টিম মোতায়েন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত ব্যারিকেড, সিসিটিভি ক্যামেরা, ও নজরদারি ড্রোনও লাগানো হয়েছে।
অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতি কী বার্তা দিচ্ছে?
২০১৯ সাল পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বোলপুর বা বীরভূমে এলে, অনুব্রত মণ্ডল তাঁর একান্ত ছায়াসঙ্গী হিসেবে থেকে যেতেন। শহরের প্রতিটি মোড়ে থাকত তাঁর হাসিমুখের ছবি, বিভিন্ন বর্ণময় ব্যানারে তাঁকে ‘বীরভূমের রক্ষাকর্তা’ হিসেবেও তুলে ধরা হতো। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে তিনি এখন কার্যত দল থেকে বিচ্ছিন্ন। গরু পাচার মামলায় জেলবন্দি অবস্থায় থাকা অনুব্রত মণ্ডল দলীয় রাজনীতি থেকেও ছিটকে পড়েছেন বলেই মনে করছেন অনেকে।
জেলবন্দি থাকাকালীনও তাঁর নাম নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা থামেনি। কিন্তু এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরে তাঁর ছবি বা উপস্থিতির নামগন্ধ না থাকায় অনেকেই বলছেন – “তৃণমূল এখন নতুন নেতৃত্বের দিকেই এগোচ্ছে।”
দলীয় স্তরের বার্তা:
জেলা নেতৃত্ব অবশ্য এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাইছেন না। এক জেলা নেতা বলেন, “এটা দলীয় স্তরের সিদ্ধান্ত। আমরা এখন মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি ও দলের উন্নয়নমূলক দিকেই নজর দিচ্ছি।”
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এবারের বোলপুর সফর শুধু প্রশাসনিক নয়, দলের ভেতরের পরিবর্তনের ইঙ্গিতও বহন করছে। অনুব্রত যুগের অবসান ঘটিয়ে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও নতুন প্রজন্মের নেতাদের হাতেই দল তুলে দিতেই এই কৌশল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।