বুধবার বিকেলে কৃষ্ণনগর-চন্দননগরে মমতা

আজ মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরেই শুরু হচ্ছে জগদ্ধাত্রী পুজোর (Jagaddhatri Puja 2025) উৎসব। উৎসবের মরশুমের শেষ পর্বে এই জগদ্ধাত্রী পুজোকে ঘিরে উচ্ছ্বাসে ভরপুর রাজ্যবাসী। বুধবার বিকেল চারটে নাগাদ কলকাতার পোস্তার এক জগদ্ধাত্রী পুজো মণ্ডপ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন রাজ্যের দুই ঐতিহ্যবাহী জগদ্ধাত্রী পুজোর শহর কৃষ্ণনগর ও চন্দননগরের একাধিক পুজো।

Advertisements

দুর্গাপুজো, কালীপুজো ও লক্ষ্মীপুজোর পর জগদ্ধাত্রী পুজোর মধ্য দিয়েই শেষ হবে এবছরের বাংলার বড় উৎসবের পালা। তাই স্বাভাবিকভাবেই এই পুজো ঘিরে রাজ্যজুড়ে উৎসবের আমেজ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তাঁর বার্তায় তিনি বলেন, “জগদ্ধাত্রী দেবীর আশীর্বাদে সকলের জীবনে আসুক শান্তি, আনন্দ ও সমৃদ্ধি।”

   

অষ্টাদশ শতাব্দীতে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরেই কৃষ্ণনগরে শুরু হয়েছিল জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন। সেই থেকেই এই পুজো কৃষ্ণনগরবাসীর কাছে আবেগের। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের প্রবর্তিত এই পুজো আজও রাজপরিবার ও শহরের বিভিন্ন ক্লাব, বারোয়ারি সংগঠন এবং পাড়ার উদ্যোগে উদযাপিত হয়ে আসছে। অন্যদিকে, চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো আজও পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম বড় এবং দর্শনীয় পুজো হিসেবে পরিচিত। ফরাসি স্থাপত্যের শহর চন্দননগর প্রতি বছর আলো, শোভাযাত্রা ও শিল্পকলা প্রদর্শনীতে রাজ্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

তবে এবছর ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’র প্রভাবে চন্দননগরের সবচেয়ে বড় মণ্ডপগুলির মধ্যে একটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সত্ত্বেও শহরবাসীর উৎসাহে কোনো ভাটা পড়েনি। পুজোর সাজ, আলো ও প্রতিমার কারুকার্যে আগের মতোই সৌন্দর্যের ছোঁয়া রয়েছে সর্বত্র। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

বুধবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পোস্তা মণ্ডপ থেকে উদ্বোধন করবেন এই ঐতিহ্যবাহী পুজোগুলির। একই সঙ্গে তিনি ভার্চুয়ালি দার্জিলিংয়ের সরস মেলাও উদ্বোধন করবেন। এটি হবে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে প্রথমবার জগদ্ধাত্রী পুজোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন।

Advertisements

চন্দননগর ও কৃষ্ণনগরের স্থানীয় প্রশাসন, ক্লাব সদস্য এবং শিল্পীরা জানিয়েছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে আমাদের পুজোর উদ্বোধন এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। রাজ্যের সর্বত্র থেকে মানুষ আসেন এই দুই শহরের জগদ্ধাত্রী পুজো দেখতে, এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না।”

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এই পুজোকে ঘিরে বাড়ছে ভিড়, হোটেল ও পরিবহণ পরিষেবাতেও দেখা যাচ্ছে উৎসবের প্রভাব। বিশেষ করে নদীয়া ও হুগলি জেলার জেলাশহরগুলো ইতিমধ্যেই সেজে উঠেছে আলোকসজ্জা ও থিম-ভিত্তিক প্রতিমা দিয়ে।

জগদ্ধাত্রী পুজো শুধুমাত্র ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও সামাজিক ঐক্যের প্রতীক। দুর্গাপুজোর পর দেবী আরাধনার এই শেষ উৎসবের মাধ্যমে রাজ্যবাসী নতুন আশার বার্তা গ্রহণ করে।