ফিশফ্রাই-কুকিজ-জলভরা সন্দেশে হয়নি, এবার মমতার হস্তক্ষেপ! মিটবে সুদীপ-কুনাল দ্বৈরথ?

   সুদীপ-কুণাল তিক্ততা কারোর অজানা নয়। প্রকাশ্যেই বারে বারে উত্তর কলকাতার তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন শাসক দলের এই তারকা প্রচারক। বেআব্রু হয়ে পড়ছে জোড়-ফুলের…

Mamata Banerjee speaks to Sudeep Banerjee and Kunal Ghosh ahead of Lok Sabha polls in North Kolkata
  

সুদীপ-কুণাল তিক্ততা কারোর অজানা নয়। প্রকাশ্যেই বারে বারে উত্তর কলকাতার তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন শাসক দলের এই তারকা প্রচারক। বেআব্রু হয়ে পড়ছে জোড়-ফুলের গোষ্ঠী কোন্দল। এ দিকে ভোটও দোরগোরায়। তাই হস্তক্ষেপ করলেন তৃণমূল নেত্রী। বুধবার শ্যামবাজার থেকে বিবেকানন্দের বাড়ি পর্যন্ত পদযাত্র করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই যাত্রা শেষে দেখা গেল, দলীয় প্রার্থী সুদীপকে ডেকে কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময়ই দলনেত্রীর গাড়ির কাছে ডাক পড়ে তৃণমূলের তারকা প্রচারক কুণাল ঘোষের। দু’জনের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন মমতা।

তৃণমূল সূত্রে খবর, এই দুই নেতাকেই একসঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। উত্তর কলকাতায় মার্জিন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিমো।

   

স্বামীজির বাড়ির সামনে মিছিল শেষ করে তাঁর মূর্তিতে মালা পরিয়ে দেন মমতা। গাড়িতে ওঠার সময় দলনেত্রীর দিকে এগিয়ে যান সুদীপ। তাঁকে দেখে মমতা বলে ওঠেন, ‘কুণাল কই?’ তখন সেখানে উপস্থিত বাকি নেতারা কুণালকে ডাকতে যান। কুমাল ঘোষ তখন রাস্তার উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। দিদি ডাকছেন শুনে এগিয়ে আসেন গাড়ির সামনে। এরপরেই সুদীপ এবং কুণালের সঙ্গে কিছু ক্ষণ কথা হয় মমতার।

মোদীর ধ্যান ভাঙাতে মরিয়া মমতা! তড়িঘড়ি পদক্ষেপের ঘোষণা

তৃণমূল সূত্রে খবর, দুই নেতার উদ্দেশেই মমতা বলেছেন, ‘কলকাতা উত্তরের আসনটি জিততে হবে আমাদের। তোমরা সেটা দেখে নিও।’ কুণাল তখন তৃমমূলকে জিততে হলে কী কী করণীয়, সেব পরামর্শ দিতে শুরু করেন সুদীপের সামনে। যা শুনে মমতা-সুদীপ উভয়ই ঘাড় নাড়েন।

বেশ কয়েক বছর ধরেই সুদীপের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন তাপস রায়। চলতি বছরের শুরুতে যাতে গলা মেলান কুণাল ঘোষ। এমনকী বর্ষীয়ান বিদায়ী সাংসদকে উত্তর কলকাতা থেকে প্রার্থী না করারও দাবি তুলেছিলেন তিনি। শেষে তাপস তৃণমূল ছাড়েন। কিন্তু দলে থেকেই সুদীপ বিরোধিতা সচল রাখেন জোড়-ফুলের এই তারকা প্রচারক।

এরপরই সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কেই উত্তর কলকাতার প্রার্থী করে তৃণমূল। তবে দলের জয়ের সমর্থনে কথা বলেও কুণাল ব্যক্তি সুদীপের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থানেই অনড় থাকেন। বেগতিক দেখে, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান কুণাল ঘোষকে। যাতে সাড়া দিয়েছিলেন কুণাল। চায়ের আমন্ত্রণে গিয়েছিলেন কুণাল। চায়ের সঙ্গে ফিশফ্রাই, কুকিজ, নাড়ু ও জলভরা সন্দেশেও। সুদীপ জায়া তথা চৌরঙ্গীর বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যয়ও সেই সময় ছিলেন বাড়িতে।

Suvendu Adhikari: চটে লাল শুভেন্দু, সভা বাতিলের পরেই ধুয়ে দিলেন মমতাকে!

তবে, ফিশফ্রাই, কুকিজ, নাড়ু ও জলভরা সন্দেশে সমস্যার সমাদান হয়নি। কাটেনি সুদীপ-কুণাল তিক্ততা। প্রকাশ্যেই সুদীপ বিরোধীতা জারি রাখেন তিনি। এর মাঝেই উত্তর কলকাতার এক রক্তদান শিবিরে গিয়ে বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়ের উপস্থিতিতে তাঁর প্রসংসা করেন কুণাল। সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজ, তাঁকে মানুষের কাছে পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তারপরই কুণাল দলীয় পদ হারান। পরে ব্রাত্য বসুর সঙ্গে ডেরেক ও’ব্রায়ানের অফিসে গিয়ে সমস্যা লঘু হয়। ফের দলের তারকা প্রচারকের তালিকায় দেকা যায় কুণাল ঘোষের নাম।

কিন্তু ক্ষান্ত হয়নি কুণাল ঘোষ। এবার তাই হস্তক্ষেপ করলেন খোদ তৃণমূল নেত্রী।