দক্ষিণবঙ্গে চলমান ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে (Dvc) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হলেন ডিভিসির (DVC) বিরুদ্ধে। পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি দাবি করেছেন, ২০২৩ সালের তুলনায় এবছর ৩০ গুণ এবং ২০২৪ সালের তুলনায় ১১ গুণ বেশি জল ছেড়েছে ডিভিসি। এই নজিরবিহীন (Dvc) জলছাড়ার জেরেই দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা বন্যা পরিস্থিতির কবলে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাঁধ, রাস্তা, ফসলের খেত এবং অসংখ্য সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি। এই অবস্থাকে তিনি ‘ম্যান মেড’ বা ‘মানবসৃষ্ট বিপর্যয়’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।(Dvc)
মমতার অভিযোগ, এভাবে ইচ্ছাকৃতভাবে জল ছেড়ে গোটা (Dvc) দক্ষিণবঙ্গকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কেন একসঙ্গে এত বিপুল পরিমাণ জল ছাড়া হল? কেন আগাম কোনও সমন্বয় হয়নি রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে? মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এর পিছনে রয়েছে এক গভীর ষড়যন্ত্র। তাঁর কথায়, “বাংলায় বন্যা ঘটানোর জন্য যেভাবে ডিভিসি জল ছেড়ে চলেছে, তা অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং গভীরভাবে উদ্বেগজনক।”(Dvc)
তিনি আরও বলেন, “আমাদের রাজ্য যে বর্ষায় প্রতিবারই জল সংবেদনশীল অবস্থায় থাকে, তা সত্ত্বেও ডিভিসি কোনো ধরনের রক্ষণশীলতা দেখাল না। বরং তারা লাগাতার জল ছাড়তে শুরু(Dvc) করল, তাও এত বিপুল হারে, যাতে বাঁধের সুরক্ষা নয়, বরং রাজ্যের উপর চাপ সৃষ্টি করা যায়। এই জল ছাড়ার পেছনে পরিকল্পিত ছক থাকতে পারে বলেই সন্দেহ করছি।(Dvc)
ডিভিসি, অর্থাৎ দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন, মূলত কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থা। (Dvc) মুখ্যমন্ত্রীর ইঙ্গিত, এই বিপর্যয়ের পেছনে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পরিকল্পিতভাবে রাজ্য সরকারকে বেকায়দায় ফেলার একটি প্রয়াসও থাকতে পারে। তিনি বলেন, “দুর্যোগকে কাজে লাগিয়ে প্রশাসনিকভাবে রাজ্যকে অস্থির করার চেষ্টা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার।”(Dvc)
রাজ্যের তরফে বারবার চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও কেন ডিভিসি এমন হঠকারী পদক্ষেপ করল, সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ত্রাণ শিবির খুলে মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানো হচ্ছে, শুকনো খাবার, চিকিৎসা সহ অন্যান্য পরিষেবাও পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এর মধ্যেই প্রশাসনিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে জলছাড়ার কারণে তৈরি নতুন নতুন প্লাবন পরিস্থিতিতে।(Dvc)
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে, রাস্তা ভেসে যাচ্ছে, বহু কৃষকের ফসল তলিয়ে গেছে। বহু মানুষ নিঃস্ব হয়ে গিয়েছেন। এর দায় কে নেবে? ডিভিসি কি এ সবের কোনও দায় স্বীকার করবে? না কি কেন্দ্র চুপ করে বসে থাকবে?”
তিনি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, এই বিষয়ে রাজ্য চুপ করে থাকবে না। আইনি দিক থেকেও বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানান মমতা। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের কথাও বলেন তিনি।
এই পরিস্থিতিতে বিরোধীরাও মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন। বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই জলছাড়াকে অস্বাভাবিক বলে দাবি করে একে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলেও ব্যাখ্যা করেছে।
সর্বোপরি, বন্যা পরিস্থিতি যতই মারাত্মক হোক না কেন, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে এক স্পষ্ট বার্তা— বাংলা মাথা নত করবে না, রাজ্যবাসীর স্বার্থে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে সরকার।