পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন, যেসব মানুষ বজ্রবিদ্যুতের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি এমন ভারী বৃষ্টি আগে কখনো দেখিনি। যেসব মানুষ এই মেঘাশ্রয়ী বৃষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের জন্য আমার অন্তরের বেদনা সীমাহীন। আজ স্কুলে ছুটি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি, অফিসেও কর্মীরা যেন না আসেন। আগামীকালও কর্মীদের বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”
মৃতদের পরিবারের জন্য সাহায্য ও CESC-এর দায়িত্ব:
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “আমি শুনেছি ৭-৮ জন বজ্রবিদ্যুতের আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। মৃতদের পরিবারের সকলকে ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশন লিমিটেড (CESC) নিয়োগ দেবে, আমি এটি স্পষ্টভাবে বলছি। আমরা সম্ভাব্য সব সহায়তা প্রদান করব। আমাদের বাড়িও জলমগ্ন, আমরা সবাই ভোগান্তির মধ্যে আছি। পুজো প্যান্ডালগুলির পরিস্থিতি নিয়েও আমি ব্যথিত। CESC-এর দায়িত্ব হলো আরও সতর্ক থাকা। তারা ব্যবসা করবে কিন্তু আধুনিকায়ন করবে না? তাদের মাঠে পাঠিয়ে এটি ঠিক করতে হবে।”
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও সরকারি পদক্ষেপ: Mamata Banerjee on Kolkata Floods
মুখ্যমন্ত্রী পরিস্থিতি মনিটর করছেন এবং পুলিশ ও প্রধান সচিবের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগে রয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি নিয়মিতভাবে মেয়র, প্রধান সচিব এবং পুলিশের সঙ্গে সংযুক্ত আছি। ফারাক্কা ঠিকমতো খনন করা হয়নি, তাই প্রতি বৃষ্টিতে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, মুম্বাই, দিল্লি এবং অন্যান্য জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা যায়। এবার বৃষ্টি কিছুটা অসাধারণ। আরও পানি আসবে, জলাবদ্ধতা আরও বাড়বে। মহালয়ার সময় গঙ্গায় উচ্চ জোয়ার আছে। আমরা কোথায় পানি পাম্প করব? যাওয়ার জায়গা নেই, পানি আবার গঙ্গায়ই যাবে। এটি পুরোপুরি বিহার ও উত্তরপ্রদেশের পানি নিয়ে আসছে। আমি প্রাইভেট সেক্টরের কর্মীদেরও অনুরোধ করছি, কাজে না আসুন, দুর্যোগ সকলের উপর সমান প্রভাব ফেলে। কেন্দ্র আমাদের জিএসটির মাধ্যমে অর্থ কমিয়েছে, আমাদের সব তহবিল এই দুর্যোগ মোকাবিলায় খরচ হচ্ছে।”
স্কুল ও সরকারি অফিস বন্ধের নির্দেশ:
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দপ্তর আগামী দুই দিনের ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাসকে কেন্দ্র করে রাজ্যের সকল স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে। এছাড়া, সরকারিভাবে পরিচালিত প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ও বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিমান চলাচলে প্রভাব:
অপরদিকে, কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও বৃষ্টিপাতের কারণে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ৩০টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে এবং ৪২টি ফ্লাইটের সময়সূচী বিলম্বিত হয়েছে।
সরকারী সহায়তা ও পুনর্বাসন:
মুখ্যমন্ত্রী এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থার সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছেন। তিনি জনগণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন এবং বলেন, সরকার সব ধরনের সাহায্য ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুত। এই দুর্ঘটনার প্রভাব কাটাতে রাজ্য সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও এলাকাগুলিকে সহায়তা প্রদান করছে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
