রাহুলের পথে মমতা? ভোট শেষে সারাদেশে প্রচার অভিযানের ইঙ্গিত

Mamata Banerjee National Politics

লোকসভা ভোটের আগে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রা কিংবা ২০২৩-এ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নবজোয়ার’—এই রাজনৈতিক সমীক্ষা-মূলক পদযাত্রাগুলির পর কি এবার তৃণমূলনেত্রী নিজেই জাতীয় ময়দানে সরাসরি নেমে পড়তে চলেছেন? মঙ্গলবার বনগাঁ শহরের ত্রিকোণ পার্কে SIR-বিরোধী জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য সেই সম্ভাবনাকেই আরও জোরালো করেছে।

Advertisements

বহুক্ষণের ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেন—ভবিষ্যতে লড়াই শুধুই বাংলা সীমাবদ্ধ থাকবে না, জাতীয় ক্ষেত্রেও বিস্তৃত হবে। তাঁর ঘোষণা, “ইলেকশনের পর আমি দেশ চষে বেড়াব।”

   

আঘাত করলে, সারা ভারতবর্ষ নাড়িয়ে দেব

সভা মঞ্চ থেকেই বিজেপিকে কড়া হুঁশিয়ারি ছুঁড়ে দিয়ে মমতার মন্তব্য, “আমাকে আঘাত করলে, সারা ভারতবর্ষ নাড়িয়ে দেব। বাংলা দখল করতে গিয়ে গুজরাট হারাবে, দেশ হারাবে। ২০২৯ ভয়ংকর বছর—ক্ষমতা হারাবে বিজেপি। দিল্লির জায়গা দখল করবে তৃণমূল।”

SIR বাস্তবায়ন ইস্যুতে সরাসরি আক্রমণ Mamata Banerjee National Politics

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন স্পষ্ট জানান, নতুন ভোটার তালিকা সংশোধনী SIR প্রকল্পকে তিনি সম্পূর্ণ বিরোধিতা করছেন না। তবে প্রশ্ন তোলেন তড়িঘড়ি করে কাজের গতি নিয়ে। তাঁর অভিযোগ—

SIR-এর কাজ এমন তাড়াহুড়ো করে করা হচ্ছে যে প্রচুর প্রকৃত ভোটারের নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এই সময়ে ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকদের উপর অযথা চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।

২–৩ বছরের কাজকে ২–৩ মাসে শেষ করার নির্দেশে সাধারণ মানুষ যেমন হয়রান, তেমনই ব্লো-দের উপরও মারাত্মক চাপ পড়ছে।

Advertisements

এরপরই প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে তাঁর আশ্বাস, “ভয় পাবেন না, আতঙ্কিত হবেন না। আমরা থাকতে আপনাদের কাউকে তাড়াতে দেব না। কেউ আত্মহননের পথ বেছে নেবেন না।”

বিহার ভোট প্রসঙ্গ টেনে বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ

সভামঞ্চ থেকে বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্তের অভিযোগ তোলেন মমতা। তাঁর কঠোর ভাষ্য—
“ওরা বিহারের খেলা ধরতে পারেনি, কিন্তু আমরা তোমার খেলা ধরতে পেরেছি। বাংলা দখল করতে কেন এত লোভ? তোমরা বাঙালিদের পছন্দ করো না, তাই তাদের চুপ করিয়ে রাখতে চাও।”

এরপরই আবার জাতীয় লড়াইয়ের সুর, “বাংলাকে টার্গেট করলে মনে রেখো—জনগণের উপর যেকোনও আক্রমণকে আমি ব্যক্তিগত আক্রমণ মনে করি। তখন আমি পুরো জাতিকে নাড়িয়ে দেব।”

২০২৯-এর বার্তা — উচ্চাকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রে দিল্লি

তৃণমূলনেত্রীর বক্তব্যে স্পষ্ট—SIR বিতর্কে প্রতিবাদের কেন্দ্রবিন্দু যেমন বাংলা, তেমনই লক্ষ্য বিজেপির জাতীয় পদচ্যুতি। তাঁর ঘোষণা, “আমার বাংলা ভালো থাকলে দেশ ভালো থাকবে। কিন্তু বাংলাকে আঘাত করলে প্রত্যাঘাত সহ্য করতে হবে।”

বনগাঁর সভা শেষ হলেও রাজনৈতিক বার্তা অতি স্পষ্ট—
 * SIR থেকে শুরু হওয়া বিরোধিতা সীমাবদ্ধ নয় প্রশাসনিক প্রশ্নে
*  মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি জাতীয় নেতৃত্বের লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিলেন
* এই সুরে বিরোধী শিবিরে তাৎপর্যপূর্ণ প্রতিক্রিয়া তৈরি হওয়া সময়ের অপেক্ষা