কলকাতা, ১৯ সেপ্টেম্বর: দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যের জেরে আগেও বিতর্কের কেন্দ্র বিন্দু হয়েছেন তৃণমূল নেতা এবং মন্ত্রীরা (Mamata Banerjee)। কিন্তু আর নয়, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে মন্ত্রীদের রাশ টানলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে তার মন্ত্রীদের মিডিয়ায় ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য’ দেওয়ার জন্য কড়া ভাষায় তিরস্কার করেছেন। সূত্রের খবর, বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী দলীয় নেতাদের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন যে, কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে মন্তব্য করার আগে ভেবেচিন্তে কথা বলতে হবে।
তিনি বলেছেন, “মন্ত্রীরা আমাদের দল এবং সরকারের মুখ। তাই তাদের মন্তব্যে সতর্ক থাকতে হবে। এমন বক্তব্যের কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।” এই নির্দেশের মধ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দলের শৃঙ্খলা জোরদার করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের মন্ত্রীদের বলেছেন সংবাদমাধ্যমে বেফাঁস কথা না বলে দুর্গাপূজার সময় নিজের নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে হবে।
একজন সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “পূজার সময় রাজ্যে শান্তি বজায় রাখতে মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রীদের কঠোরভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা নিতে বলেছেন।” এই নির্দেশ বিশেষত পূজার সময় সম্ভাব্য অশান্তি বা অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বৈঠকে মন্ত্রিসভা বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো তাজপুর-ডানকুনি-রঘুনাথপুর অর্থনৈতিক করিডরের উন্নয়নের জন্য পশ্চিমবঙ্গ শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন লিমিটেড (ডব্লিউবিআইডিসি)-কে ২০০ একর জমি হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত। মুখ্যমন্ত্রী এর আগে রাজ্যে ছয়টি ফ্রেট করিডর গড়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন, যার মধ্যে তাজপুর-রঘুনাথপুর করিডর অন্যতম।
এই প্রকল্পটি রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে এবং শিল্প বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। একজন কর্মকর্তা বলেন, “এই করিডর বাণিজ্য ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি হাব হিসেবে গড়ে উঠবে। জমি বরাদ্দ এই প্রকল্পের প্রাথমিক পদক্ষেপ।”
দেশীয় ফুটবল স্বার্থে ‘কাতর আর্জি’ খালিদের! ডাক পেলেন আরও দুই
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর এই কড়া বার্তা এবং মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তগুলি রাজ্যের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। রাজনৈতিক সমোলোচকদের মতে মমতার এই সাবধানবাণী আসন্ন বিধানসভাকে লক্ষ করেই। কারণ তিনি জানেন এর আগেও নেতা মন্ত্রীরা সংবাদমাধ্যমে বেফাঁস কথা বলে বিতর্কে জড়িয়েছেন। তাই ভোটের আগে দলের ভাবমূর্তি কিছুটা হলেও স্বচ্ছ করতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। যাতে বিতর্কিত বা বেফাঁস কথা দলের অভ্যন্তরীন দুর্বলতা সাধারণ মানুষের সামনে নতুন করে চলে না আসে।