বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালি হেনস্থার প্রতিবাদ, আজ রাজপথে মমতা ও অভিষেক

কলকাতা: বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর একের পর এক হেনস্থার ঘটনার প্রতিবাদে এবার রাজপথে নামছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলায় কথা বলার ‘অপরাধে’ শ্রমিকদের…

mamata and abhishek attend rally

কলকাতা: বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর একের পর এক হেনস্থার ঘটনার প্রতিবাদে এবার রাজপথে নামছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলায় কথা বলার ‘অপরাধে’ শ্রমিকদের বাংলাদেশি তকমা দিয়ে জেলে পোরা ও পুশব্যাক করার অভিযোগ ঘিরে উত্তাল বাংলার রাজনীতি। তারই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার কলকাতার কলেজ স্ট্রিট থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে থাকবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও (mamata and abhishek attend rally)।

‘বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি?’ প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর

বিধানসভা থেকেই এই ইস্যুতে সরব হয়েছিলেন মমতা। সম্প্রতি অধিবেশনে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিলেন, “বাংলায় কথা বললেই কেউ বাংলাদেশি হয়ে যায়?” মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ছিল, “ভারত বহু ভাষার দেশ। তাহলে বাংলাভাষাকে কেন্দ্র করে মানুষের পরিচয়কে কেন প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে?” তিনি সরাসরি বিজেপির বিরুদ্ধে ভাষার ভিত্তিতে রাজনীতি করার অভিযোগ তোলেন।

   

বাঙালি হেনস্থার প্রতিবাদে বৃহৎ কৌশল তৃণমূলের

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাঙালি পরিচয় ও মাতৃভাষার প্রতি অপমানের অভিযোগকে সামনে রেখে তৃণমূল কংগ্রেস জনমত গঠনের কৌশল নিয়েছে। আজকের মিছিল সেই পরিকল্পনারই অংশ। শুধু কলকাতাই নয়, আজ রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতেও প্রতিবাদ মিছিল করবে শাসক দল।

সূত্রের খবর, দিল্লিতেও এই ইস্যুতে প্রতিবাদ কর্মসূচি নিতে পারে তৃণমূল। বার্তা স্পষ্ট—বাংলা ও বাঙালিদের বিরুদ্ধে অন্য রাজ্যে চলা ‘বৈষম্যের রাজনীতি’ নিয়ে জাতীয় স্তরে আন্দোলন গড়তে চায় জোড়াফুল শিবির।

যেসব রাজ্যে অভিযোগ উঠেছে

অসম, ওডিশা, হরিয়ানা, দিল্লি, ছত্তিসগড়, মহারাষ্ট্র-বিজেপি শাসিত একাধিক রাজ্য থেকে বাংলাভাষী শ্রমিকদের হেনস্থার অভিযোগ উঠে এসেছে সম্প্রতি।
ছত্তিসগড়ে নদিয়ার ৯ জন বাসিন্দাকে বাংলায় কথা বলার কারণে প্রথমে গ্রেফতার, পরে রাজ্যের বাইরে বের করে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
মহারাষ্ট্রের পুনেতেও যাঁদের হেনস্থা করা হয়েছে, তাঁদের কাছে আধার কার্ড তো ছিলই, এমনকি সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের পরিচয়পত্রও ছিল, যাতে স্বাক্ষর রয়েছে বিজেপি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের।

Advertisements

সোশ্যাল মিডিয়াতেও মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিবাদ

মুখ্যমন্ত্রী এই ইস্যুতে সোশ্যাল মিডিয়াতেও সক্রিয়। লিখেছেন, “বাংলার মানুষ যদি নিজের দেশেই অনাহূত অতিথির মতো আচরণের শিকার হন, তাহলে বাংলা চুপ করে থাকবে না।” আজকের মিছিল থেকেই তিনি এই আন্দোলনের আগামী রূপরেখা ঘোষণা করতে পারেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

বার্ষিক সমাবেশের আগে বার্তা

তৃণমূলের বার্ষিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে আগামী সোমবার, ২২ জুলাই। তার ঠিক আগেই মুখ্যমন্ত্রীর রাজপথে নামা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। মনে করা হচ্ছে, আজকের কর্মসূচি থেকেই বিজেপি বিরোধী প্রচারের বড় প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।