পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আমলে ধ্বংসের মুখে রয়েছে বলে তীব্র সমালোচনা করেছেন বিজেপি নেতা অমিত মালব্য (Malviya)। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা এখন “ঘুগুর বাসা” হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে শিক্ষার পরিবর্তে রাজনীতি ও দুর্নীতি প্রাধান্য পাচ্ছে।
তাঁর মতে, ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে কলেজে ভর্তির আগ্রহ কমে যাওয়ায় রাজ্য সরকারকে ভর্তির আবেদনের সময়সীমা দুই সপ্তাহ বাড়াতে বাধ্য করা হয়েছে(Malviya)। এই অবস্থার জন্য তিনি তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) সরকারের অবহেলা, দুর্নীতি এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপকে দায়ী করেছেন। মালব্য বলেন, “বাংলার শিক্ষার পরিমণ্ডল শেষ হয়ে গেছে। মেয়েদের নিরাপত্তা নেই।
তাই ছাত্র-ছাত্রীরা(Malviya) উচ্চশিক্ষার জন্য মুম্বই, বেঙ্গালুরু এবং এমনকি ওড়িশার মতো রাজ্যের দিকে পাড়ি জমাচ্ছে।”শিক্ষা ব্যবস্থার অবনতিএকসময় বাংলা বুদ্ধিবৃত্তিক শ্রেষ্ঠত্বের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু অমিত মালব্যর অভিযোগ, তৃণমূলের শাসনকালে এই গৌরব ক্রমশ ধূলিসাৎ হচ্ছে। তিনি দাবি করেছেন যে, রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ছাত্রীদের উপর পদ্ধতিগত শোষণ এবং যৌন নির্যাতন এখন স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে।
এই পরিস্থিতি তৃণমূল সরকারের অধীনে আরও খারাপ হয়েছে(Malviya)। তিনি বলেন, “ছাত্রীদের নিরাপত্তাহীনতা এবং কর্মসংস্থানের অভাবের কারণে বাংলার তরুণরা রাজ্য ছেড়ে অন্যত্র যাচ্ছে। এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং তৃণমূলের দীর্ঘদিনের অবহেলা ও দুর্নীতির ফল।”সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫-এর ভর্তি মরসুমে রাজ্যের কলেজগুলিতে আবেদনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
এর ফলে সরকারকে ভর্তির সময়সীমা দুই সপ্তাহ বাড়াতে হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় একটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য। ছাত্র-ছাত্রীরা নিরাপদ এবং উন্নত শিক্ষার পরিবেশের জন্য মুম্বাই, বেঙ্গালুরু এবং ওড়িশার মতো রাজ্যের দিকে ঝুঁকছে। এই প্রবণতা বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার অবনতির স্পষ্ট ইঙ্গিত।
মালব্যর (Malviya) অভিযোগ, তৃণমূলের শাসনকালে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ছাত্রীদের উপর যৌন নির্যাতন এবং শোষণের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনার রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে, যা ছাত্রীদের মধ্যে ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
এই ঘটনাগুলি তদন্তে প্রায়ই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে, যা তৃণমূলের প্রতি জনগণের ক্ষোভ বাড়িয়েছে। এছাড়া, রাজ্যে কর্মসংস্থানের অভাব তরুণদের মধ্যে হতাশা বাড়াচ্ছে। মালব্য বলেন, “বাংলায় কোনো কাজ নেই, কোনো ক্যারিয়ারের সুযোগ নেই। তরুণরা তাদের ভবিষ্যৎ গড়তে অন্য রাজ্যে যাচ্ছে।
তৃণমূলের অবহেলা (Malviya) এবং দুর্নীতির কারণে বাংলার শিক্ষা ও অর্থনীতি ধ্বংসের মুখে।”তৃণমূলের প্রতিক্রিয়াতৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযোগগুলি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং দাবি করেছে যে রাজ্য সরকার শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য কাজ করছে। তৃণমূল দাবি করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা কন্যাশ্রী, যুবশ্রী এবং বিভিন্ন বৃত্তির মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্য করছি।”
তবে, বিরোধী দলগুলি এই দাবিকে “ফাঁকা আওয়াজ” হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছে। অমিত মালব্যর এই মন্তব্য আসন্ন ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপির প্রচারকে আরও তীব্র করেছে। তিনি বলেন, “বাংলাকে বাঁচাতে ২০২৬-এ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করা ছাড়া কোনো পথ নেই।”
বিজেপি দাবি করেছে যে, (Malviya) তৃণমূলের শাসনকালে রাজ্যে দুর্নীতি, অপরাধ এবং অবহেলা বেড়েছে, যা শিক্ষা ব্যবস্থার পতনের অন্যতম কারণ। সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের বিভিন্ন কলেজে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি এবং পড়াশোনার মানের অবনতি ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে হতাশা বাড়াচ্ছে।
এছাড়া, কলেজ (Malviya) ও বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রভাব বৃদ্ধির অভিযোগও উঠেছে, যা শিক্ষার পরিবেশকে রাজনীতিকরণ করছে বলে দাবি করা হয়।অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবশিক্ষা ব্যবস্থার এই অবনতি বাংলার অর্থনীতি এবং সমাজের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তরুণদের রাজ্য ছেড়ে চলে যাওয়ার ফলে বাংলা দক্ষ মানবসম্পদ হারাচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য ক্ষতিকর।
এছাড়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তাহীনতা এবং দুর্নীতির কারণে অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সরকারের প্রতি আস্থা হ্রাস পাচ্ছে। অমিত মালব্যর তীব্র সমালোচনা বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার বর্তমান সংকটকে তুলে ধরেছে। ছাত্র-ছাত্রীদের রাজ্য ত্যাগ, কলেজে ভর্তির আগ্রহ হ্রাস এবং নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তৃণমূল সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
বিনা সম্মতিতে গাছ কাটার অভিযোগ কলকাতা বন্দরের বিরুদ্ধে, ক্ষুব্ধ মেয়র
২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে (Malviya) এই সমস্যাগুলি সমাধানে সরকারের তৎপরতা এবং স্বচ্ছতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থাকে পুনরুজ্জীবিত করতে শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা, শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি। মালব্যর মতে, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হল তৃণমূলের পরাজয়। তবে, এই সমালোচনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিনা, তা ভবিষ্যতের নির্বাচনই প্রমাণ করবে।