মালদহের (Maldah Institute) গনি খান চৌধুরি কারিগরি কলেজ হঠাৎ করেই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হল। ছাত্রদের বিক্ষোভের কারণে এই সিধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ একটি নোটিসে জানিয়েছে। শনিবার সকালেই কলেজ কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নেয়। শনিবার সকাল ১০টার মধ্যে সমস্ত ছাত্রকে কলেজ ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
গনি খান চৌধুরি কারিগরি কলেজের ছাত্ররা দীর্ঘদিন ধরে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আন্দোলন চালাচ্ছিল। তাদের দাবী ছিল, বি.টেক তৃতীয় বর্ষের ‘ওড সেমেস্টার’ পরীক্ষার ফল দ্রুত প্রকাশ করা হোক। ১০ ফেব্রুয়ারি এই পরীক্ষার ফল প্রকাশের কথা ছিল, কিন্তু ২৫ দিন অতিবাহিত হলেও ফল প্রকাশ করা হয়নি। এই বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং ম্যাকাউট (মৌলানা আবুল কালাম আজাদ কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) একে অপরকে দোষারোপ করছে। ম্যাকাউট কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, ফল প্রকাশের দায়িত্ব তাদের। তবে গনি খান চৌধুরি কারিগরি কলেজের প্রশাসন জানাচ্ছে, ম্যাকাউটের অনুমোদন ছাড়া ফল প্রকাশ সম্ভব নয়।
শুক্রবার বিকেল ৪টা থেকে ছাত্ররা কলেজের প্রশাসনিক ব্লকের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। রাতে তা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। ছাত্ররা রেজাল্টের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে এবং তাদের আন্দোলন থামানোর জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে চাপ দিতে থাকে। পরিস্থিতি এমন এক পরিস্থিতিতে পৌঁছেছিল যে, কর্তৃপক্ষকে কলেজ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
এই আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক না হয়ে ওঠার জন্য গনি খান চৌধুরি কারিগরি কলেজ কর্তৃপক্ষ শুক্রবার রাতে হঠাৎ করেই অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে। সকালে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়, কলেজের ক্যাম্পাসে আর কোনও ছাত্র বা হস্টেলের আবাসিক থাকতে পারবে না। সকলকে কলেজ ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যেতে হবে।
এর আগেও ২০১৬ সালে গনি খান চৌধুরি কারিগরি কলেজ বন্ধ করে দেয় কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। সেই সময়ও ছাত্রদের পক্ষ থেকে জোর আন্দোলন করা হয়েছিল। পরিস্থিতি এতটাই তীব্র হয়ে উঠেছিল যে, শেষমেষ কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এবারও একই পথে হেঁটেছে সরকার, যাতে ছাত্র আন্দোলন আরও জোরাল না হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ছাত্ররা আন্দোলন শুরু করে এবং সকালে কলেজ কর্তৃপক্ষ বন্ধের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে আন্দোলন আরও বাড়ে। ছাত্ররা রেজাল্ট প্রকাশের দাবিতে কলেজের সামনে উত্তাল হয়ে ওঠে। আন্দোলনকারীরা বলছেন, ‘আমাদের পরিশ্রমের ফল না জানলে আমরা কীভাবে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যাব?’ এই ধরনের অভিযোগ ঘিরে ছাত্রদের মধ্যে ক্ষোভ তীব্র হয়ে উঠেছে।