সরকারি চাকরিতে নিয়োগের (Job Recruitment) ক্ষেত্রে যাতে আর কোনওরকম দেরি না হয়, সেজন্য এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। নবান্ন থেকে রাজ্যের সমস্ত দপ্তরে পাঠানো নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে— চাকরিপ্রার্থীর পুলিশ যাচাইকরণ (Verification) এবং মেডিক্যাল রিপোর্ট প্রস্তুতের প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে ৩০ দিনের মধ্যে। মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর স্বাক্ষরিত এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়সীমা না মানলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে আগে সতর্ক করা হবে এবং প্রয়োজনে পরে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কেন এই নির্দেশিকা?
নবান্নে একাধিকবার খবর আসছিল, চাকরিপ্রার্থীর পুলিশ ভেরিফিকেশন ও মেডিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্ট তৈরি হতে দেরি হওয়ায় নিয়োগ (Job Recruitment) বিলম্বিত হচ্ছে। বিশেষ করে, WBPSC (West Bengal Public Service Commission) কিংবা অন্য নিয়োগ সংস্থা সুপারিশপত্র দেওয়ার পরেও পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষ না হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন চাকরির অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছিল প্রার্থীদের। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই দপ্তর বদল, পদ বাতিল বা জনবল সমস্যার মুখে পড়ছিল রাজ্য প্রশাসন।
নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, চাকরিপ্রার্থী সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই, ওয়েবসাইট ও ইমেলের মাধ্যমে তাঁকে জানাতে হবে যে পুলিশ ভেরিফিকেশন ও মেডিক্যাল পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এরপর সংশ্লিষ্ট দপ্তর ৩০ দিনের মধ্যে এই দুই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে বাধ্য।
চাকরিপ্রার্থীকে যদি কোনও দপ্তরে বা হাসপাতালের পরীক্ষার জন্য সশরীরে হাজিরা দিতে হয়, তাহলেও তা ওই সময়সীমার মধ্যেই করতে হবে। সমস্ত রিপোর্ট জমা পড়ার পরই তাঁকে নিয়োগের জন্য নির্দেশ পাঠাতে হবে, যাতে তিনি নির্ধারিত সময়ে যোগদান করতে পারেন।
এই নির্দেশ অমান্য করলে, প্রথমে সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে সতর্ক করা হবে। কিন্তু দ্বিতীয়বারেও যদি একই ঘটনা ঘটে, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
WBPSC বা অন্য কোনও সংস্থা যখন চাকরির সুপারিশ পাঠাবে, তখনই সেই তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং মেডিক্যাল পরীক্ষার যে সমস্ত ধাপ বা কাগজপত্র প্রয়োজন, তা আগেভাগে প্রার্থীদের জানিয়ে দিতে হবে। ৩০ দিনের মধ্যে সব কাজ শেষ করে, চাকরিপ্রার্থীকে অফিসে যোগদানের দিন জানাতে হবে।
রাজ্যের চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে এই নতুন নির্দেশিকা আশার আলো দেখাচ্ছে। এখন রাজ্য সরকার চাইছে, যাতে যোগ্য চাকরিপ্রার্থী সময়মতো চাকরি পান, এবং প্রশাসনিক কাজের গতি বাড়ে। ভবিষ্যতে যাতে এই নিয়ম লঙ্ঘন না হয়, সেজন্য নবান্ন নিজে থেকেই নজরদারি চালাবে বলেও প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে।
এই নতুন নির্দেশিকার ফলে পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং মেডিক্যাল পরীক্ষার বিলম্বজনিত কারণে আর চাকরি প্রক্রিয়ায় দেরি হবে না বলেই আশা প্রশাসনের। এতে যেমন নিয়োগের গতি বাড়বে, তেমনই চাকরিপ্রার্থীদেরও ভরসা বাড়বে সরকারি নিয়োগ ব্যবস্থার উপর।