কৃষ্ণনগর এমএলএ মহুয়া মৈত্র তার সাম্প্রতিক একটি ভিডিও বার্তায় বলেছেন (Mahua Moitra)। আমি ভারত বাংলাদেশ বর্ডার এলাকার প্রতিনিধিত্ব করছি। আমি জানি যে নদিয়ার ওপারেই আছে কুষ্টিয়া। যেখানকার পরিকাঠামো নদিয়ার থেকে ভালো। তিনি তার ভিডিও বার্তায় আরও বলেছেন যে মোদী এবং অমিত শাহ দুজনে মিলে এই দেশের ক্ষতি করছেন।
কৃষ্ণনগরের কাকিমা মহুয়া মৈত্রর কথা অনুযায়ী কেউ ভারতবর্ষে থাকতে চায় না। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নাকি ভারতের থেকে ভালো।
কাকিমা এখানে কেন আছেন? টুক করে চলে গেলেই তো পারেন।
যে দেশে থাকবেন সে দেশের অপমান করে আছেন কেন? pic.twitter.com/w6T8njUzzW
— Tarunjyoti Tewari (@tjt4002) July 28, 2025
ভারতে কেউ থাকতে চায় না। ভারতের থেকে বাংলাদেশের পরিকাঠামো কিছু খেরে অনেক ভালো। তার এই ভিডিও বার্তায় স্বভাবতই বিতর্ক শুরু হয়ে রাজনৈতিক মহলে। আইনজীবী তরুণ জ্যোতি তিওয়ারি তার এক্স হ্যান্ডেলে কটাক্ষ করে মহুয়াকে কৃষ্ণনগরের কাকিমা’ বলে সম্বোধন করেছেন এবং তাকে পরামর্শ দিয়েছেন ভারত ছেড়ে বাংলাদেশে চলে যাওয়ার।
তিনি আরও বলেছেন “যে দেশে থাকবেন সেই দেশের অপমান না করে অন্য দেশে চলে যান।” বিরোধী নেতারাও এই বিষয়ে মহুয়াকে নিশানা করে বলেন, “ভারতের সাংসদ হয়ে বাংলাদেশের প্রশংসা করা এবং দেশের অবকাঠামোকে ছোট করা শুধুমাত্র দায়িত্বহীনতাই নয়, বরং দেশের মানুষের প্রতি অপমান। মহুয়া মৈত্রের এই মন্তব্য তৃণমূলের দেশবিরোধী মুখোশ খুলে দিয়েছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, এই ধরনের বক্তব্য ভারতের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় গর্বের প্রতি আঘাত।মহুয়ার বক্তব্যের সমর্থনে তৃণমূলের একাংশ বলছেন, তিনি কেবল কৃষ্ণনগরের পরিকাঠামোগত সমস্যার দিকে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের এঙ্সের দাবি কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর উন্নয়নে মনোযোগ দেওয়া।”
তবে, এই ব্যাখ্যা বিরোধীদের সমালোচনার ঝড় থামাতে পারেনি। সোশাল মিডিয়ায় মহুয়ার বক্তব্য ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একজন নেটিজেন লিখেছেন, “ভারতের সাংসদ হয়ে বাংলাদেশের প্রশংসা করা লজ্জাজনক। মহুয়া কি ভুলে গেছেন তিনি কোন দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন?” আরেকজন লিখেছেন, “নদিয়ার উন্নয়ন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে দেশের অপমান করার কী দরকার ছিল?”
এই বিতর্কের মাঝে মহুয়া এখনও তাঁর বক্তব্যের স্পষ্টীকরণ দেননি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মন্তব্য তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিকর হতে পারে, বিশেষ করে ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে। বিজেপি এই ঘটনাকে তৃণমূলের ‘দেশবিরোধী মনোভাব’ হিসেবে প্রচার করছে, যা রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা যোগ করেছে।
‘কত হারিয়েছি নয়, কত ধরাশায়ী করেছি জানতে চান’: কড়া বার্তা রাজনাথের
মহুয়ার এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে, যখন সংসদে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে তীব্র আলোচনা চলছে। পহেলগাঁও হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের কঠোর অবস্থান এবং যুদ্ধবিরতি নিয়ে বিতর্কের মধ্যে এই মন্তব্য আরও জটিলতা যোগ করেছে। সমালোচকদের মতে, মহুয়ার বক্তব্য ভারতের জাতীয় গর্বের প্রতি অসম্মানজনক এবং সীমান্তবর্তী এলাকার জনগণের মনোভাবের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।