মিলন পণ্ডা, মহিষাদল (পূর্ব মেদিনীপুর): পূর্ব মেদিনীপুর (Purba Medinipur) জেলার মহিষাদল থানার পুলিশ ফের একবার প্রমাণ করল—দ্রুত সিদ্ধান্ত, প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার এবং সৎ নাগরিকদের সহায়তায় যে কোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব। মঙ্গলবার দুপুরে হারিয়ে যাওয়া এক মহিলার গহনা ও মোবাইল-সহ ব্যাগ মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উদ্ধার করে তার হাতে ফিরিয়ে দিল পুলিশ। একইসঙ্গে এক জন টোটো চালকের সততা ও সহযোগিতার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন পুলিশ আধিকারিকেরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে লক্ষ্যার কালিকাকুণ্ডু গ্রামের বাসিন্দা সুমিত্রা পাত্র নামে এক মহিলা মহিষাদলের সিনেমা মোড় এলাকা থেকে একটি টোটো করে দ্বারিবেড়িয়া যাচ্ছিলেন। যাত্রা শেষে টোটো থেকে নামার কিছু সময় পরই তিনি বুঝতে পারেন, নিজের ব্যাগটি টোটোতেই ফেলে এসেছেন। ব্যাগে ছিল সোনার গহনা, মোবাইল ফোন এবং একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি। ব্যাগ হারিয়ে ফেলায় সুমিত্রা দেবী এবং তার পরিবার অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে আর দেরি না করে তিনি সোজা হাজির হন মহিষাদল থানায়। থানায় অভিযোগ দায়ের করামাত্রই পুলিশ সক্রিয় হয়ে ওঠে। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে সুমিত্রা দেবীর মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করতে শুরু করে পুলিশ।
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, যে টোটোতে ওই মহিলা যাত্রা করেছিলেন, সেই চালক নিজেও ব্যাগটি খুঁজে পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তিনি ঠিক করেন, নিজেই থানায় গিয়ে ব্যাগটি ফিরিয়ে দেবেন। ঠিক সেই মুহূর্তেই পুলিশ ফোন ট্র্যাক করে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে।
চালকের নাম সুকুমার সামন্ত, তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের চক গাজীপুর এলাকার বাসিন্দা। সৎ মানসিকতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার পরিচয় দিয়ে তিনি নিজেই থানায় হাজির হয়ে ব্যাগটি এবং তাতে থাকা সমস্ত মূল্যবান সামগ্রী পুলিশকে তুলে দেন। পরবর্তীতে মহিষাদল থানার পক্ষ থেকে সেই ব্যাগ, গহনা, মোবাইল ও নথিপত্র সুমিত্রা দেবীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
পুরো ঘটনায় পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ ও পদ্ধতিগত তদন্ত সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। এ ধরনের ঘটনার মাধ্যমে পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আরও দৃঢ় হয়। পাশাপাশি টোটো চালক সুকুমার সামন্তের সততা ও মানবিক মূল্যবোধও সমাজে এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করল।