বেলঘরিয়ার গুলিকান্ডে এবার মুখ খুললেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)। ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর বাসুদেবপুরে শনিবার রাতে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। তৃণমূল কর্মী বিকাশ সিং-এর উপর গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় এক দুষ্কৃতী। ঘটনাটি চায়ের দোকানে ঘটে, যেখানে কয়েকজন স্থানীয় উপস্থিতি ছিল। বিকাশ সিং তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা। তিনি স্থানীয় কাউন্সিলরের পরিচিত ছিলেন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর, বিকাশকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যদিও তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল, তবে ঘটনার পর উত্তেজনা বেড়েছে বেলঘরিয়ায়।
এদিকে, বিকাশ সিং ছাড়াও ওই শুটআউটে আরও এক তরুণ আহত হন। স্থানীয় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে, তবে এখনও মূল কারণটি পরিষ্কার হয়নি। গুলি চালানোর পর, রাজ্য রাজনীতি সরগরম হয়ে ওঠে। বিরোধীরা মদন মিত্রের বিরুদ্ধে একযোগে সরব হন। তাদের দাবি, এলাকার দখলের লড়াইয়ের কারণেই এই হামলা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে ভিকি যাদব নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে, তবে মূল অভিযুক্ত ইন্দাল যাদব এখনও পালিয়ে রয়েছে। পুলিশ তাকে ধরতে পারছে না।
এখন এই ঘটনায় উত্তেজনা আরও বাড়ছে। ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্মলা রাই জানান তিনি ভীত, সন্ত্রস্তও। তিনি দাবি করেছেন, ‘এই ঘটনায় কারও না কারও হাত রয়েছে। যদি আমি মুখ খুলতে চেষ্টা করি, তবে আমার পরিবারের ওপর আক্রমণ হতে পারে। কাউন্সিলর হয়েও আমি কি খুন হতে পারি না?’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি যদি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা না বলি, তাহলে কিছু হবে না।’
এদিকে, নির্মলা রায়ের এই ভয় নিয়ে কথা বলার পর বিরোধীরা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে। তারা প্রশ্ন তুলেছে, রাজ্য সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা কার্যকর? নির্মলা রায়ের এই বক্তব্য রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে নানা আলোচনা সৃষ্টি করেছে। বিরোধীরা বলছেন, নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে রাজ্য সরকারের প্রতি জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra) এই বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘কাউন্সিলরকে খুনের ভয় দেখানোর বিষয়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’ মদন মিত্র আরও বলেন, ‘যদি কাউন্সিলর বারবার এই কথা বলেন, তবে এটা দলবিরোধীতা হবে।’ যদিও তিনি নির্মলা রায়ের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। মদন মিত্র দাবি করেন, বেলঘরিয়ায় এমন পরিস্থিতি নেই যে কাউকে খুনের শঙ্কা হতে পারে।
এখনও পর্যন্ত পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত করছে। পুলিশ তদন্তে কিছুটা অগ্রগতি করেছে, তবে পরিস্থিতি এখনও স্পষ্ট নয়। স্থানীয়দের ধারণা, এলাকার দখল নিয়ে মারামারি ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা এই হামলার পেছনে বড় কারণ। যদিও কাউন্সিলরের বক্তব্য থেকে জানা গেছে, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আরও অনেক কিছু খোলামেলা আলোচনার প্রয়োজন।
এই ঘটনায় একদিকে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে, অন্যদিকে স্থানীয় জনতা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। অনেকেই এখন নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। প্রশাসন ও রাজ্য সরকারের দ্রুত পদক্ষেপের দাবিও উঠেছে। বেলঘরিয়ার পরিস্থিতি তাই এখন সবার নজরে।