আলিপুর আবহাওয়া (Weather) দফতরের তরফে জানানো হয়েছে যে, আজ মঙ্গলবার ২ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় আবহাওয়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেঘলা থাকবে, এবং কিছু জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে, যখন উত্তরবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টা রাজ্যের জেলাগুলিতে বৃষ্টির প্রভাব অব্যাহত থাকবে।
দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ায় আজ মেঘলা আকাশের সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
কলকাতায় আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে থাকবে। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ৮০-৯০% থাকতে পারে, যা ভ্যাপসা গরমের অনুভূতি বাড়াবে। পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং ঝাড়গ্রামে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, এবং এই জেলাগুলিতে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় জেলাগুলিতে ৩০-৪০ কিমি/ঘণ্টা বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
উত্তরবঙ্গের আবহাওয়া
উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই জেলাগুলিতে কমলা এবং লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগর থেকে আসা জলীয় বাষ্প এবং নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তরবঙ্গের উপরের জেলাগুলিতে প্রবল বর্ষণ হতে পারে, যা ভূমিধস এবং নদীর জলস্তর বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২২-২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৮-২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে। উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের আঞ্চলিক প্রধান সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি বর্তমানে উড়িষ্যা উপকূলের কাছে অবস্থান করছে, এবং এটি পশ্চিমবঙ্গের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
এর প্রভাবে আগামী দুই দিন দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে, এবং উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে।” তিনি আরও বলেন, “উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এবং জনসাধারণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”এই আবহাওয়ার প্রভাবে কৃষি ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে। উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের ঝুঁকি থাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গে, বিশেষ করে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় জল জমে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। কলকাতা পৌরসংস্থা (কেএমসি) ইতিমধ্যে নিকাশী ব্যবস্থা পরিষ্কার করার কাজ শুরু করেছে এবং জল নিষ্কাশনের জন্য পাম্প স্থাপন করা হয়েছে।আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বর্ষার শেষের দিকে এই নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে, যা কৃষকদের জন্য উপকারী হলেও অতিরিক্ত বৃষ্টি ফসলের ক্ষতি করতে পারে।
সম্ভবত মঙ্গলেই সুপ্রিয় রায়ে ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ
আলিপুর আবহাওয়া দফতর পরামর্শ দিয়েছে, কৃষকরা তাদের ফসলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন এবং বাসিন্দারা বাইরে বের হওয়ার আগে আবহাওয়ার আপডেট দেখে নিন।আগামীকাল ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির তীব্রতা কিছুটা বাড়তে পারে, এবং উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী সপ্তাহে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে, তবে সম্পূর্ণ রোদের আবহাওয়া ফিরতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।