ফাঁপড়ে মহঃ সেলিম, রে-রে করে বড় প্রশ্ন সিপিআইএম কর্মীদের

নিউজ ডেস্ক: সিপিএমের রাজ্যে কমিটির বৈঠকে ধুন্ধুমার। লোকসভা ভোটে পরাজয় নিয়ে রাজ্য কমিটির নেতাদের কাঠগড়ায় তুলল নিচুতলার বামকর্মীরা। বুধবার সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠকে ভোটে এই…

নিউজ ডেস্ক: সিপিএমের রাজ্যে কমিটির বৈঠকে ধুন্ধুমার। লোকসভা ভোটে পরাজয় নিয়ে রাজ্য কমিটির নেতাদের কাঠগড়ায় তুলল নিচুতলার বামকর্মীরা। বুধবার সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠকে ভোটে এই হতাশাজনক ফলাফলের কারণ কি? তা নিয়েই কাঁটাছেড়া চলছিল। প্রথমে সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু হঠাত্ সুর কাটলেন হুগলি জেলার কোনও এক পঞ্চায়েতস্তরের নেতা। তিনি বলে বসেন, রাজ্য সম্পাদক নিজে কেন ভোটে দাঁড়িয়েছেন? অর্থ্যত্ তাঁর নিশানায় যে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, তা বুঝতে কারওরই অসুবিধা হয়নি। ততক্ষণে হুগলির ওই জেলা নেতার পাশে দাঁড়িয়েছেন বর্ধমানের কৃষকসভার নেতা অমল হালদার। তিনিও সেলিমের প্রার্থী হওয়ার যৌক্তিকতা খুঁজে পাননি বলেই জানান। নিচুতলার নেতা-কর্মীদের এমন মনোভাব থাকায় অস্বস্তিতে পড়তে হয় সিপিএম নেতাদের।

এবার লোকসভা ভোটে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্র থেকে জোটের প্রার্থী হয়েছিলেন মহম্মদ সেলিম। মাত্র ৫ লক্ষ ১৮ হাজার ২২৭টি ভোট পেয়েছেন তিনি। সংখ্যালঘু অধুষ্যিত এলাকা হওয়া সত্বেও তৃণমূলের আবু তাহের খানের কাছে হেরে গিয়েছেন তিনি। গতবার, ২০১৯ লোকসভায় ভোটেও রায়গঞ্জ থেকে প্রার্থী হন সেলিম। সেবারও বিজেপির দেবশ্রী চৌধুরির কাছে পরাজিত হয়েছিলেন রাজ্য বামফ্রন্টের এই ‘বড়’
নেতা। একদিকে যখন বামেদের ভোট-ভরাডুবির গ্রাফ ক্রমশই উর্ধ্বমূখী, তখন ‘ক্যাপ্টেন’ নিজে মাঠে নেমে হেরে যাওয়ায় মুখ পুড়েছে দলের। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিকমহল।

   

কয়েকদিন আগে দলের ভোট বিপর্যয় নিয়ে ময়না তদন্ত করেছিল আলিমু্দ্দিন স্ট্রিট। লাগাতার প্রচার ও প্রতিবাদ সত্বেও রাজ্যের মধ্যবিত্ত ও যুব সমাজের মন বুঝতে পারেনি ব্যর্থ হয়েছে দল। এই লাইনেই নিজেদের মত রাখেন বাম নেতারা। তারপর বুধবারের বৈঠকে দলের হারের নেপথ্যে শীর্ষ নেতৃত্বের অদূরদর্শিতাকেই দায়ী করেছে দলের কর্মীরা। এমনকি দিল্লির গোপালন ভবনেও এই ইস্যুটিও উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি জোটসঙ্গী কংগ্রেসকে নিয়েও অস্বস্তি বাড়ছে বাম শিবিরে।

২০১৬ সাল রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়তে কংগ্রেসের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিল আলিমুদ্দিন। তখন রাহুল গান্ধীর হাত থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে ফুলের মালা পড়তেও দেখেছিল গোটা বাংলা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সেই ফুলের মালাই কী হয়ে উঠছে ‘কাঁটার মালা’? সম্প্রতি আসন্ন উপনির্বাচনে বাগদা আসনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে বামেদের সঙ্গে জটিলতা বেড়েছে কংগ্রেসের। কংগ্রেসের পুরনো আসনে একরকম না জানিয়ে প্রার্থী দেয় ফরোয়ার্ড ব্লক। বামেদের এই প্রতিশ্রুতিভঙ্গ মেনে নিতে পারছে না বিধানভবন। এই জটিলতা আরও বাড়িয়েছে ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে লেখা অধীর চৌধুরির চিঠি। বাগদা নিয়ে তাঁর আবদারকে একরকম হুমকি বা অনধিকার চর্চাই মনে করছেন বাম কর্মীরা। তবে জোট জটিলতা আর আলিমুদ্দিনের অন্দরের কোন্দল কোন দিকে মোড় নেয় সেটাই দেখার।