বজ্রপাতে রাজ্যে মৃত্যু ১৭ জনের, পূর্ব বর্ধমানেই প্রাণ হারালেন পাঁচ কৃষক

বর্ধমান: বৃহস্পতিবার দুপুর গড়াতেই রাজ্যে যেন নেমে এলো প্রাকৃতিক তাণ্ডব। দুপুর ঠিক ১২টা নাগাদ আচমকাই মেঘে ঢেকে যায় আকাশ। সন্ধ্যা নেমে আসে দিনের আলোয়। তারপর…

বজ্রপাতে রাজ্যে মৃত্যু ১৭ জনের, পূর্ব বর্ধমানেই প্রাণ হারালেন পাঁচ কৃষক

বর্ধমান: বৃহস্পতিবার দুপুর গড়াতেই রাজ্যে যেন নেমে এলো প্রাকৃতিক তাণ্ডব। দুপুর ঠিক ১২টা নাগাদ আচমকাই মেঘে ঢেকে যায় আকাশ। সন্ধ্যা নেমে আসে দিনের আলোয়। তারপর শুরু হয় পরপর বজ্রপাত (Lightning Strikes)৷ বজ্রপাতে রাজ্যে মৃত্যু ১৭ জনের, পূর্ব বর্ধমানেই প্রাণ হারালেন পাঁচ কৃষক, তীব্র আলো ও বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। আর এই বজ্রপাতেই বৃহস্পতিবার রাজ্য জুড়ে প্রাণ হারালেন অন্তত ১৭ জন। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির মুখে পূর্ব বর্ধমান জেলা, যেখানে বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের।

পূর্ব বর্ধমান জেলার মাধবডিহি থানার আলমপুরে জমিতে চাষ করার সময় বাজ পড়ে মৃত্যু হয় সনাতন পাত্র (৬০) নামে এক কৃষকের। তাঁর বাড়ি মাধবডিহি গ্রামেই। একই থানার শেরপুর এলাকায় জমিতে কাজ করার সময় বাজ পড়ে প্রাণ যায় খণ্ডঘোষ থানার মুইধারা গ্রামের যুবক পরিমল দাসের (৩৫)।

   

রায়না থানার তেণ্ডুলে গ্রামে মৃত অভিজিৎ সাঁতরা (২৫) নামের এক যুবক জমিতে চাষের সময় বজ্রাঘাতের কবলে পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। তিনি স্থানীয় বাসিন্দা।

অন্যদিকে মঙ্গলকোট থানার অন্তর্গত চানক গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা বুড়ো মাড্ডি (৬৪) চাষের সময় বাজ পড়ে প্রাণ হারান। আউসগ্রাম থানার দিয়াশা হাটমারা মাঠে চাষের সময় বাজ পড়ে মৃত্যু হয় রবীন টুডু (২৫) নামের আর এক কৃষকের। তাঁর বাড়ি আউসগ্রাম থানার বেলাড়ি তাঁতপুকুর এলাকায়।

পাশাপাশি, ভাতারের ভূমশোড় এলাকায় চাষের সময় বাজ পড়ে আহত হয়েছেন চার জন। এছাড়াও, মাধবডিহি থানার শেরপুরে জমিতে কাজ করার সময় বজ্রাঘাতে আহত হয়েছেন আরও একজন।

এই মর্মান্তিক ঘটনার পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মৃতদের পরিবারকে অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জেলার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, ‘‘এই সময় অনেকেই মাঠে কৃষিকাজে ব্যস্ত থাকেন। কেউ কেউ গরু চড়াতে যান। তাই দিনের বেলায় বজ্রপাত শুরু হওয়ায় হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে।’’

Advertisements

তিনি আরও জানান, সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন করতে বিশেষ প্রচারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গায় না যাওয়া, মোবাইল ফোন ব্যবহার না করা, গাছের নিচে না থাকা ইত্যাদি বিষয়গুলি গ্রামবাসীদের মধ্যে প্রচার করা হবে।

এই মুহূর্তে বর্ষার সময় বজ্রপাতের ঝুঁকি প্রবল থাকে। আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকেও নিয়মিত সতর্কতা জারি করা হচ্ছে। কৃষকদের মাঠে যাওয়ার আগে আবহাওয়ার সতর্ক বার্তা অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

জেলার বিভিন্ন ব্লকে দ্রুত ক্ষতিপূরণের আর্থিক অনুদান পৌঁছে দিতে তৎপরতা শুরু হয়েছে প্রশাসনের তরফে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য দফতর আহতদের চিকিৎসায় নজর রাখছে।

এই ঘটনায় রাজ্যজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও এগিয়ে এসেছেন।