জীবনতলায় কার্তুজ উদ্ধার, এসটিএফের অভিযান থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানার ইশ্বরীপুর এলাকায় একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত কার্তুজের দোকান এখন পুলিশের বিশেষ নজরদারির অধীনে। সম্প্রতি, বেঙ্গল এসটিএফ (স্টেট টাস্ক ফোর্স) ওই দোকানে অভিযান…

Licensed Gun Shop Under Bengal STF's Scanner in Jibantala Case

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানার ইশ্বরীপুর এলাকায় একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত কার্তুজের দোকান এখন পুলিশের বিশেষ নজরদারির অধীনে। সম্প্রতি, বেঙ্গল এসটিএফ (স্টেট টাস্ক ফোর্স) ওই দোকানে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু রেজিস্ট্রার বাজেয়াপ্ত করেছে এবং পাঁচ বছরের স্টক খতিয়ে দেখছে। এর মধ্যেই ওই দোকানের মালিককে তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য ডাকা হয়েছে। তদন্তকারীরা ইতিমধ্যে এই দোকানের বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র বিক্রির বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন, যেগুলো বেআইনি কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

এমন সময়ে, বেঙ্গল এসটিএফ শুক্রবার রাতে হাজি রশিদ মোল্লার বাড়িতে হানা দিলে, সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনার পর তদন্তকারীরা সেখানে অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, হাজি রশিদ মোল্লা (বাড়ির মালিক), আশিক ইকবাল গাজি (হাসনাবাদ), আবদুল সেলিম গাজি (হাসনাবাদ) এবং জয়ন্ত দত্ত (শান্তিপুর)।

   

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযানে উদ্ধার হওয়া কার্তুজগুলি একটি বড় ধরনের অস্ত্রচালনার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে, যা বেআইনি কাজকর্মে ব্যবহৃত হতে পারে। এসটিএফের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, এই কার্তুজগুলির মাধ্যমে অপরাধী চক্র অস্ত্রের সঞ্চালন করছিল। যেহেতু এই দোকানটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত, তাই পুলিশ প্রথমে ধারণা করেছিল যে এখান থেকে নিয়মিতভাবেই সেনা বা নিরাপত্তা বাহিনী সম্পর্কিত বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু, তদন্তের পরে এটা স্পষ্ট হয় যে, একাধিক বেআইনি কাজে এসব অস্ত্র ব্যবহার হতে পারে।

এই ঘটনাটি স্থানীয় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। একদিকে যেখানে স্থানীয়রা দোকানটির মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তাঁকে সন্দেহের চোখে দেখছেন, অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও অত্যন্ত সতর্ক হয়ে তদন্ত চালাচ্ছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, কিভাবে একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকান এই বিপুল পরিমাণ কার্তুজ বিক্রি করতে পারলো এবং কেন প্রশাসন এ বিষয়ে আগে নজরদারি চালায়নি।

এদিকে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। রেলওয়ে, পুলিশ এবং সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ বাড়িয়ে এই চক্রের অন্য সদস্যদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এই ঘটনার সমস্ত প্রেক্ষিত জানা যাবে বলে আশা করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও বেআইনি অস্ত্রবাণিজ্য ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের প্রসঙ্গ সামনে চলে এসেছে, যা দেশের নিরাপত্তার জন্য বড় বিপদ হতে পারে। এখন তদন্তের উপর নির্ভর করছে এই চক্রের পরবর্তী স্তর কী হতে পারে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে কোথায় গলদ রয়েছে।