বীরভূম: রাজ্যের কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিকে আরও জোরদার করতে ফের একবার বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বীরভূম জেলার প্রশাসনিক সভা থেকে তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প (Lakshmir Bhandar Scheme) এবার থেকে সারাজীবনের জন্য দেওয়া হবে। ২৫ বছর বয়স হলেই মহিলারা এই প্রকল্পের আওতায় আসতে পারবেন এবং আর্থিক সহায়তা সারাজীবন পাবেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে ৯ লক্ষেরও বেশি মা-বোনেরা উপকৃত হচ্ছেন। এতদিন বয়সসীমা ও কিছু নিয়মাবলী ছিল, এখন থেকে ২৫ বছর বয়স হলেই এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া যাবে, এবং তা সারা জীবনের জন্য চলবে। তাই নিশ্চিন্তে থাকুন।”
২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই প্রকল্প চালু করে। এর মাধ্যমে ২৫–৬০ বছর বয়সী মহিলাদের মাসিক নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেওয়া হয়—সাধারণ জাতির মহিলাদের জন্য ৫০০ টাকা এবং তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য ১০০০ টাকা। সরকারের মতে, এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হল মহিলাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলা এবং পরিবারের খরচে তাদের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা।
এই প্রশাসনিক সভা থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “বাংলার বাড়ি প্রকল্পে কেন্দ্রের অংশীদারিত্ব থাকা সত্ত্বেও গত ৩-৪ বছর ধরে তারা কোনও টাকা দেয়নি। রাজ্য সরকার নিজস্ব অর্থে ২৮ লক্ষের বেশি বাড়ি তৈরি করেছে। এটা মানুষের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা।”
তিনি আরও বলেন, “কেন্দ্র শুধু প্রতিশ্রুতি দেয়, কাজ করে না। বাংলার মানুষ যাতে মাথা গোঁজার ঠাঁই পান, তার জন্য আমরা রাজ্য সরকারের তরফে একা লড়ছি।”
সভায় মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, স্বাস্থ্যসাথী, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, কন্যাশ্রী, সবুজ সাথীর মতো একাধিক প্রকল্প এখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের প্রতিটি প্রকল্পই মানুষের জন্য, এবং জনগণের টাকাতেই এই উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে।”
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা নিঃসন্দেহে রাজ্যের মহিলাদের কাছে এক বড় বার্তা। দীর্ঘস্থায়ী আর্থিক সুরক্ষা এবং আবাসনের নিশ্চয়তা—এই দুটি দিককে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে সামাজিক ন্যায়ের পথে চলার বার্তা দিচ্ছে, তা আর একবার প্রমাণিত হল। আসন্ন নির্বাচনের আগে এই বার্তাই রাজনীতির ময়দানেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।