কুণালের হুঁশিয়ারি, ‘পুলিশকর্মীদের বাঘ পাহারায় পাঠাবো, বিরোধীদের পালটা মন্তব্য

কুণালের (Kunal’s) হুঁশিয়ারি (warning), ‘পুলিশ (police) কর্মীদের বাঘ পাহারায় পাঠাবো, বিরোধীদের (opposition) পালটা মন্তব্য (reaction)। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল (Kunal) ঘোষের একটি বিতর্কিত মন্তব্যের…

Kunal's warning opposition reaction

কুণালের (Kunal’s) হুঁশিয়ারি (warning), ‘পুলিশ (police) কর্মীদের বাঘ পাহারায় পাঠাবো, বিরোধীদের (opposition) পালটা মন্তব্য (reaction)। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল (Kunal) ঘোষের একটি বিতর্কিত মন্তব্যের পর রাজ্যে নতুন রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামে সমবায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। কুণাল ঘোষ বলেন, “যারা রাজ্য সরকারের দায়িত্বে থেকেও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতে ভুলছেন, এবং অন্তর্ঘাত করছেন, তাদের ২০২৬ সালের পর সুন্দরবনে (Sundarbans) বাঘ পাহারা দিতে পাঠানো হবে।”

এই বক্তব্যে কুণাল ঘোষের ইঙ্গিত ছিল সেই সব পুলিশ কর্মীদের দিকে যারা তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করছেন এবং প্রশাসনিক কাজের প্রতি দায়িত্বহীন। তিনি বলেন, “যারা সরকার বিরোধী কাজ করছেন, তাদের শাস্তি হিসেবে সুন্দরবনে বাঘ পাহারা দিতে পাঠানো হবে, প্রস্তুত থাকুন।” এই বক্তব্যের পর রাজ্যে রাজনৈতিক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

   

বিরোধী দলগুলি এই বক্তব্যকে তীব্রভাবে সমালোচনা করেছে। বিজেপি নেতা শমীক লাহিড়ি কুণাল ঘোষের বক্তব্যকে রাজনৈতিক হুমকি এবং রাজ্যের শাসন ব্যবস্থার প্রতি অসম্মান হিসেবে দেখেছেন। তিনি বলেন, “এ ধরনের বক্তব্য পুলিশ প্রশাসনের স্বাধীনতা এবং শৃঙ্খলার প্রতি অবমাননা। পুলিশ যদি সরকারের পক্ষ না নেয়, তাহলে তাদের এমন হুমকি দেওয়া মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীরও কুণালের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “এটাই এখন পরিস্থিতি, যদি কেউ তোলাবাজি বা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাহলে তাদের বদলি করে দেওয়া হয়। তৃণমূল সরকারের আমলে পুলিশকর্মীরা তাদের স্বাধীনতা হারিয়েছে এবং রাজনৈতিক নির্দেশনায় কাজ করছেন।”

এই বিতর্কের মধ্যেই, বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিচুতলার পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, কিছু পুলিশ কর্মী সিআইএসএফের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কয়লা-বালি পাচারে জড়িত। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নিচুতলার কিছু পুলিশকর্মী শুধু নিজেদের স্বার্থে কাজ করছে, তারা সরকারের জন্য কাজ করছে না।”

এদিকে, কুণাল ঘোষের বক্তব্য এবং মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভের পর রাজ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়ছে। তৃণমূল এবং বিরোধী দলগুলির মধ্যে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের মধ্যে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বিতর্ক রাজ্যে পুলিশের স্বাধীনতা এবং শাসন ব্যবস্থার উপর নতুন চাপ সৃষ্টি করবে।

তবে, কুণালের বক্তব্যের পেছনে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং পুলিশের রাজনৈতিক অবস্থানকে সামনে এনে বিরোধীরা দাবি করছে যে, এটি এক ধরনের “পুলিশি প্রতিহিংসা”। রাজনৈতিক অঙ্গনে এই বক্তব্য আরও দীর্ঘমেয়াদী বিতর্ক তৈরি করতে পারে, যেখানে রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।