২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে এখন থেকেই উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেছে বঙ্গ রাজনীতি (West Bengal Politics)। এক বছর আগেই ভবিষ্যৎ রাজনীতির চিত্র আঁকার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং প্রধান বিরোধী শক্তি বিজেপি। এর মধ্যেই মঙ্গলবার ঝাড়গ্রামের শিলাদায় তৃণমূলের বিজয়া সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে দলীয় রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) যে মন্তব্য করলেন, তা রাজনৈতিক মহলে জোর শোরগোল ফেলেছে।
কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) সাফ জানিয়েছেন, “ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনে একটা বড় পরিবর্তন হতে চলেছে। বিরোধী দলনেতা বলে কিছু থাকবে না। কারণ, বিরোধী দলনেতা হওয়ার জন্য যে সংখ্যক বিধায়ক দরকার, তা ওদের থাকবে না।” তাঁর এই মন্তব্য যে বিজেপিকে নিশানা করে তা আর বুঝতে বাকি থাকেনি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
তৃণমূলের এই হুঙ্কারে স্বভাবতই বাড়ছে চাপ গেরুয়া শিবিরে। একদিকে ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে রাজ্যজুড়ে অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূল, অন্যদিকে বিজেপিও পাল্টা অভিযোগ তুলে বলছে, তৃণমূল ভোটে কারচুপি করতে চায়। এর মাঝেই কুণালের (Kunal Ghosh) এই মন্তব্য রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কুণাল ঘোষের এই বক্তব্য একটি কৌশলগত প্রচার। এর মাধ্যমে একদিকে নিজেদের কর্মীদের চাঙ্গা রাখার চেষ্টা, অন্যদিকে বিজেপির মনোবল ভাঙার কৌশল—উভয় দিকেই নজর রেখেছেন তিনি। পাশাপাশি তৃণমূলের আশাবাদও স্পষ্ট হচ্ছে যে, তারা আগামী বিধানসভা ভোটে আরও বড় ব্যবধানে জয়লাভ করবে।
তবে শুধু মুখের কথায় বিজেপি থেমে থাকার দল নয়। ইতিমধ্যেই দলের রাজ্য নেতৃত্ব জোর কদমে নিচুতলার সংগঠন মজবুত করতে শুরু করেছে। বিভিন্ন কেন্দ্রে সাংগঠনিক বৈঠক, বুথ স্তরে পুনর্বিন্যাস—সব মিলিয়ে ২০২৬-এর জন্য নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছে বিজেপিও।
রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পশ্চিমবঙ্গে ভোট মানেই উত্তেজনা, প্রত্যাশা এবং চমক। কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) মন্তব্য সেই চমকের একটি দৃষ্টান্ত হিসেবেই দেখা যেতে পারে। তবে বাস্তবে কী হবে, তা বোঝা যাবে আরও কিছু মাস পর। কিন্তু একথা বলাই যায়, ছাব্বিশের বিধানসভা ভোট যে হাড্ডাহাড্ডি হবে, তার ইঙ্গিত এখন থেকেই স্পষ্ট।
এখন দেখার বিষয়, কুণাল ঘোষের এই ‘বিরোধী দলনেতা থাকবে না’ মন্তব্য কতটা বাস্তব হয়, নাকি এটি কেবলমাত্র রাজনৈতিক বার্তা—তা সময়ই বলবে। তবে আপাতত, এই মন্তব্য ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে আলোচনার ঝড় বইছে।