হাওড়া: কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে (Kona Expressway) ৬ লেনের এলিভেটেড করিডর তৈরির কাজ জোরকদমে চলছে। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে সাঁতরাগাছি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় রাস্তা ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে, যার ফলে নিত্যদিন তীব্র যানজটের মুখে পড়ছেন সাধারণ যাত্রীরা। বিশেষত অফিস সময় এবং ব্যস্ত সময়ে এই যানজট এতটাই বাড়ছে যে পুজোর আগে ও পুজোর সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে হাওড়া পুলিশ প্রশাসন বড়সড় পদক্ষেপ নিল।
শুক্রবার হাওড়া পুলিশ কমিশনার প্রবীণকুমার ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, ১০ আগস্ট রবিবার থেকে সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে কোনও পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করতে পারবে না। তবে রাত ১১টার পর থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে না, অর্থাৎ রাতের বেলায় পণ্যবাহী গাড়িগুলি স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারবে।
এই সিদ্ধান্তের মূল লক্ষ্য হল দুর্গা পুজোর আগে এবং চলাকালীন সময়ে যানজট নিয়ন্ত্রণে আনা, যাতে কলকাতা ও হাওড়া সংযোগকারী এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় সাধারণ যাত্রীরা নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারেন। কমিশনার জানিয়েছেন, বর্তমানে এলিভেটেড করিডরের গ্রাউন্ড লেভেলের কাজ চলছে। কাজের এই ধাপ শেষ হলে এবং উপরের অংশে কাজ শুরু হলে পরিস্থিতি অনুযায়ী পুনরায় পণ্যবাহী গাড়ির চলাচলের অনুমতি দেওয়া হতে পারে।
পূর্বে পণ্যবাহী গাড়িগুলি দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ও দিল্লি রোড ধরে মাইতিপাড়া হয়ে হাওড়ার উপর দিয়ে দ্বিতীয় হুগলি সেতু হয়ে কলকাতা প্রবেশ করত। কিন্তু এখন থেকে এই সমস্ত গাড়ি নিবেদিতা সেতু হয়ে টালা ব্রিজ হয়ে কলকাতা বন্দরের দিকে কিংবা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় যেতে পারবে। এছাড়া, কলকাতা থেকে হাওড়ার দিকে বা মুম্বই হাইওয়ের দিকে যাওয়া পণ্যবাহী গাড়িগুলিকেও ঘুরপথে যেতে হবে।
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, আন্দুল রোড ও হাওড়া-আমতা রোডকে বিকল্প হিসাবে ব্যবহারের জন্য যাবতীয় বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। এই দুটি রাস্তায় পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে কোনও নিষেধাজ্ঞা থাকছে না। ফলে, পণ্যবাহী যানবাহনগুলি এই বিকল্প রাস্তাগুলি ধরে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে।
কোনা এক্সপ্রেসওয়ে হাওড়া ও কলকাতার মধ্যে অন্যতম ব্যস্ততম সংযোগপথ। প্রতিদিন অসংখ্য পণ্যবাহী গাড়ি ও সাধারণ যানবাহন এই রাস্তায় যাতায়াত করে। চলমান অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে সড়ক সংকীর্ণ হয়ে যাওয়ায় যানজটের সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এর ফলে অফিসগামী মানুষ, জরুরি সেবার গাড়ি এবং গণপরিবহণও বিপাকে পড়ছে।
পুলিশ প্রশাসনের দাবি, এই সাময়িক নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে পুজোর আগে যানজট অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে। পাশাপাশি, দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও কমবে। তারা জানিয়েছেন, প্রয়োজনে অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হবে বিকল্প রুটগুলিতে, যাতে যান চলাচল নির্বিঘ্ন থাকে।
প্রশাসন আশা করছে, এই পদক্ষেপের ফলে সাধারণ যাত্রীরা যেমন স্বস্তি পাবেন, তেমনই পণ্য পরিবহণকারী সংস্থাগুলিও বিকল্প রুট ব্যবহার করে সময়মতো মালামাল পৌঁছে দিতে সক্ষম হবে। যদিও কিছুটা সময় বেশি লাগতে পারে, তবুও দুর্গা পুজোর সময় যানজট নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছে হাওড়া পুলিশ।