কলকাতা: রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকার স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR)। নির্বাচন কমিশনের এই বিশেষ সংশোধন প্রক্রিয়ার লক্ষ্য একটাই কোনও যোগ্য ভোটারের নাম যেন বাদ না পড়ে। কিন্তু এই কার্যক্রম শুরু হতেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে এসেছে। বিশেষ করে, সমাজের দু’টি প্রান্তিক শ্রেণি বিচারাধীন বন্দি/সাজাপ্রাপ্ত মানুষ এবং যৌনপল্লিতে বসবাসকারী নাগরিকরা কি SIR প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন? তাঁরা কি ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন?
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতের সংবিধান এবং ভোটার তালিকা সংশোধন নীতি অনুযায়ী কোনও যোগ্য নাগরিককে ভোটার হতে বাধা দেওয়া যাবে না, যতক্ষণ না তিনি কোনও নির্দিষ্ট আইনি নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ছেন। কমিশন ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারকে বিস্তারিত নির্দেশিকা পাঠিয়েছে, যাতে সমস্ত উপযুক্ত নাগরিক এমনকি সমাজের প্রান্তে থাকা মানুষরাও ভোটার তালিকায় নাম তোলার সুযোগ পান।
বিচারাধীন বন্দি ও সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ক্ষেত্রে কী নিয়ম?
বিচারাধীন বন্দি: ভোটার তালিকায় নাম তোলার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে। SIR প্রক্রিয়াতেও তাঁদের নাম নথিভুক্ত করা যাবে। তবে জেল থেকে ভোট দেওয়ার অধিকার নেই (Representation of People Act, 1951 অনুযায়ী)। অর্থাৎ ভোটার হিসেবে নাম থাকতে পারে, কিন্তু জেল থেকে ভোট দেওয়ার অধিকার নেই।
সাজাপ্রাপ্ত বন্দি: তাদের নাম ভোটার তালিকায় তালিকাভুক্ত করা যেতে পারে। তবে কারাবন্দি থাকাকালীন ভোট দিতে পারবেন না। সাজা শেষ হলে এবং মুক্তির পরে আবার ভোটাধিকার সম্পূর্ণ কার্যকর হয়। অর্থাৎ নাম তোলা যাবে, কিন্তু কারাগারে থাকাকালীন ভোটাধিকার স্থগিত থাকে।
যৌনপল্লিতে বসবাস করা নাগরিক পরিচয় বাতিলের কোনও কারণ নয়। স্থায়ী বা অস্থায়ী ঠিকানার নথি থাকলে ভোটার তালিকায় নাম তোলা যাবে। মনকি উপযুক্ত ঠিকানার নথি না থাকলেও Booth Level Officer (BLO) যাচাই করে নাম নথিভুক্ত করতে পারেন। কমিশন বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছে, সামাজিক বা পেশাগত পরিচয়ের ভিত্তিতে কোনও নাগরিককে ভোটার তালিকা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।
বিভিন্ন এনজিও ও মানবাধিকার সংগঠন বহু বছর ধরেই যৌনকর্মীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে সোচ্চার। নির্বাচন কমিশনও এই দাবিকে মান্যতা দিয়েই নির্দেশ জারি করেছে যে, ঠিকানার প্রমাণ, আধার, রেশন কার্ড, বা অন্য বৈধ নথি থাকলে তাঁদের নাম অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।


