কলকাতা: বিধানসভায় ‘SIR’–এর (TMC protests SIR) বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিশেষ প্রক্রিয়া Special Summary Revision (SIR)–এর ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। সেই উদ্বেগ এখন রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রে। এবার বিষয়টি তোলা হবে রাজ্য বিধানসভায়।
২৭ অক্টোবর, নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গ সহ ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে SIR চালুর দিনক্ষণ ঘোষণা করে। এর পর থেকেই SIR নিয়ে আতঙ্কের অভিযোগ সামনে এসেছে। তৃণমূলের কথায়, সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভয় তৈরি হয়েছে প্রয়োজনে নথি দেখানো না গেলে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ে যেতে পারে। এই অনিশ্চয়তার পরিবেশকেই তৃণমূল রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে তুলে ধরছে।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রেড রোড থেকে জোড়াসাঁকো পর্যন্ত পদযাত্রা করেন। হাঁটা মিছিলের সঙ্গে ছিল প্ল্যাকার্ড “SIR বন্ধ করো,” “ভোট কাড়ার চাল চলবে না।”
জোড়াসাঁকোয় বক্তৃতায় মমতা বলেন, “এটা নির্বাচন নয়, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা।” অভিষেকের মন্তব্য, “SIR দিয়ে ভয়ের রাজনীতি চালাতে চাইছে বিজেপি ও কমিশন।” তৃণমূলের নেতৃত্বের দাবি, যেখানে যেখানে BLO–র পরিবর্তে রাজনৈতিক দলের এজেন্টরা ফর্ম বিলি করছেন, সেখানেই সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
তৃণমূল সূত্রের দাবি, গত কয়েক দিনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে SIR নিয়ে মানসিক চাপ ও উদ্বেগে কয়েকজন আত্মঘাতী হয়েছেন বা অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন। যদিও এই অভিযোগ নির্বাচন কমিশন বা পুলিশের তরফে নিশ্চিত করা হয়নি।
তৃণমূলের আইনপ্রণেতা ও পরিষদীয় দলের এক সদস্যের দাবি, “ভোটার তালিকার ফর্ম নিয়ে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে চাপ তৈরি হচ্ছে। বহু মানুষ মনে করছেন ভোটের অধিকার হারাবেন।” শীতকালীন অধিবেশনে তৃণমূল, ভোটারদের আতঙ্ক, কমিশনের ব্যবস্থাপনা, নথি যাচাইকরণে অস্পষ্টতা এই তিনটি বিষয় তুলে ধরবে। তৃণমূলের লক্ষ্য SIR প্রক্রিয়া রাজ্যজুড়ে স্থগিত বা পুনর্বিবেচনা করানো।
BJP–র পাল্টা দাবি, “SIR একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। ভয় দেখিয়ে ভোট ব্যাংক ধরে রাখতে চাইছে তৃণমূল।” তাদের বক্তব্য, ভোটার তালিকা সংশোধন প্রতিবারই হয়, তৃণমূলই বিষয়টিকে অযথা রাজনৈতিক করছে।
অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশনের দাবি, নিয়ম মেনে BLO–রাই দায়িত্বে থাকবে, ভোটার পরিচয়পত্র থাকা বাধ্যতামূলক নয়, কোনও নাগরিকের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া যাবে না, তবুও রাজ্যে পরিস্থিতি যে রাজনৈতিকভাবে উত্তপ্ত, তা স্পষ্ট।


