বাড়ি বন্ধ, ভোটার আতঙ্কে পাশে দিদির হেল্পডেস্ক

mamata-and-abhishek-begin-tmc-mega-rally-with-tribute-at-ambedkar-monument

কলকাতা: রাজ্যে চলছে বিশেষ নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধন অভিযান (SIR)। সেই অনুযায়ী বুথ লেভেল অফিসাররা ঘুরে ঘুরে যাচ্ছেন প্রতিটি বাড়িতে। নাগরিকদের ভোটার কার্ডে প্রয়োজনীয় সংশোধন, নাম সংযোজন কিংবা ঠিকানা পরিবর্তনের প্রক্রিয়া চলছে পুরোদমে। কিন্তু সমস্যার সূত্রপাত হয়েছে তখনই, যখন দেখা যাচ্ছে অনেক বাড়ি বন্ধ, ফলে বিএলও ফিরে যাচ্ছেন খালি হাতে। এতে অনেকে আশঙ্কা করছেন, নাম বাদ পড়ে যেতে পারে ভোটার তালিকা থেকে।

Advertisements

এই পরিস্থিতিতেই হস্তক্ষেপ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মঙ্গলবার তিনি জানান, “যদি কেউ বাড়িতে না থাকেন এবং বিএলও ফিরে যান, তাহলে আতঙ্কিত হবেন না। আমরা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এলাকায় এলাকায় হেল্পডেস্ক বা সহায়তা শিবির তৈরি করেছি। সেখানে যোগাযোগ করলে প্রতিটি নাগরিককে ভোটার তালিকা সংশোধনের সহায়তা করা হবে।”

   

তিনি আরও বলেন, “এই প্রক্রিয়ায় ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা আপনাদের পাশে আছি। অফিশিয়াল বিএলও ছাড়া অন্য কাউকে তথ্য দেবেন না, সতর্ক থাকুন। কারণ অনেকেই সুযোগ নিয়ে ভুয়ো তথ্য নিতে পারে।”

মুখ্যমন্ত্রী নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আধার কার্ডের সঙ্গে আরও একটি বৈধ নথি দিতে হবে। বাড়ির দলিল, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, স্কুল সার্টিফিকেট, জন্ম শংসাপত্র বা ওবিসি সার্টিফিকেট এগুলোর মধ্যে যেকোনও একটি নথি দিতে পারেন। এটা নিয়মিত প্রক্রিয়ার অংশ।”

তিনি আরও যোগ করেন, “তৃণমূলের ক্যাম্পে গিয়ে নাগরিকরা সবরকম সাহায্য পেতে পারেন। কেউ যদি বিএলওর সঙ্গে যোগাযোগ না করতে পারেন, তাহলে ক্যাম্প থেকেই ফর্ম ও তথ্য জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। ভোটার তালিকা থেকে যেন একটিও নাম বাদ না যায়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।”

Advertisements

এই উদ্যোগকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতি তীব্র হয়ে উঠেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, “সরকারি প্রক্রিয়ায় দলীয় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।” অন্যদিকে শাসকদলের যুক্তি, “আমরা নাগরিকদের পাশে রয়েছি এটা রাজনৈতিক নয়, সামাজিক দায়িত্ব।”

ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকে তৃণমূলের কর্মীরা হেল্পডেস্ক চালু করেছেন। সেখানে নাগরিকদের ভোটার সংশোধন ফর্ম পূরণে সাহায্য করা হচ্ছে, প্রয়োজনীয় নথি যাচাই করা হচ্ছে। মমতা বলেন, “আমরা চাই না কারও নাম বাদ যাক। প্রয়োজনে থালা-বাটি বেচে হলেও সাহায্য করব। নাগরিকরা চিন্তা করবেন না, সরকার ও দল আপনাদের পাশে আছে।”

রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত এই নিবিড় সংশোধন অভিযান চলবে। বিএলওরা নির্দিষ্ট সময়ে পুনরায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় গিয়ে যাচাই করবেন। তাই নাগরিকদের অনুরোধ করা হচ্ছে, বাড়িতে উপস্থিত থেকে প্রক্রিয়ায় সহায়তা করুন।

ভোটের আগে এই অভিযান ঘিরে রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্কের মেঘ কাটাতে মুখ্যমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে কিছুটা স্বস্তির হাওয়া বইছে গ্রাম থেকে শহর  সর্বত্রই।