কলকাতা: রবিবারের ছুটির দিনে সপ্তাহান্তের কেনাকাটা সামলাতে ভোর থেকেই শহর ও মফস্বলের বাজারে উপচে পড়েছে সাধারণ ক্রেতাদের ভিড়। শীতের শুরুতেই সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি এলেও বেশ কয়েকটি সবজিতে এখনও চাপ বজায় রয়েছে। একদিকে যেমন পেঁয়াজ–আলুর দাম মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে, অন্যদিকে ক্যাপসিকাম, বিনস, বেবি কর্ন ও ঢেঁড়সের মতো সবজিতে দেখা গেছে খানিকটা বেশি দাম।
আজ বাজারে বড় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ₹27 থেকে ₹34, সর্বোচ্চ ₹45 প্রতি কেজি, যা গত সপ্তাহের তুলনায় সামান্য কম। ছোট পেঁয়াজের দাম এখনও তুলনামূলক বেশি ₹45 থেকে ₹57, সর্বোচ্চ ₹74 প্রতি কেজি। টমেটোর দাম স্থিতিশীল রাখা গেলেও ₹31–₹39, সর্বোচ্চ ₹51 প্রতি কেজি-তে বিক্রি হওয়ায় উৎসাহ বেড়েছে সাধারণ ক্রেতাদের। শীতের শুরুতেই বাজারে গাজরের উপস্থিতি নজর কেড়েছে—দাম ₹42–₹53, সর্বোচ্চ ₹69।
সব ডোমেনে যুদ্ধ প্রস্তুত ভারত, পাকিস্তানকে স্পষ্ট বার্তা সেনাকর্তার
সবচেয়ে বেশি দামের মধ্যেই রয়েছে কাঁচা লংকা—₹44–₹56, সর্বোচ্চ ₹73 প্রতি কেজি। বিক্রেতাদের দাবি, সরবরাহ কম থাকায় দাম পড়ে না। অন্যদিকে আলুর ক্ষেত্রে বেশ স্বস্তি—₹37–₹47, সর্বোচ্চ ₹61 প্রতি কেজি, যা শাকসবজির ঝুড়িতে খানিকটা সুরাহার অনুভূতি দিয়েছে। বীট ₹31–₹39, কুমড়ো ₹28–₹40, চাল কুমড়ো (অ্যাশ গার্ড) ₹24–₹30, বোতল লাউ ₹28–₹36, তুলনামূলক কম দামে মিলেছে।
শীতের রান্নাঘরে রঙিন সংযোজন হিসেবে থাকা ক্যাপসিকাম ও ব্রকোলির মতো পুষ্টিকর সবজিতে দাম বেশি—ক্যাপসিকাম ₹40–₹51, সর্বোচ্চ ₹66। ব্রড বিনস, ফ্রেঞ্চ বিনস ও বাটার বিনসেও চাপ—₹48–₹61, সর্বোচ্চ ₹79 পর্যন্ত উঠেছে। রাস্তার পাশের ঠেলাগাড়ি বিক্রেতাদের অভিযোগ, পাইকারি বাজারেই দাম বেশি, ফলে খুচরাতে কমানো সম্ভব নয়।
পালং, লাল শাক, কচু শাক, ধনেপাতা–এর মতো পাতা জাতীয় সবজি বেশ সুলভে দাম ধরা পড়েছে—ধনেপাতা ₹10–₹13, মেথি–ডিল ₹11–₹18, কচু পাতা ₹13–₹21, যা মধ্যবিত্ত পরিবারের থালায় শীতের স্বাদ জাগিয়েছে। সবজিজুড়ে দাম কম হলেও ড্রামস্টিক (সজনে ডাঁটা) এখনও উচ্চতায়—₹60–₹76, সর্বোচ্চ ₹99 প্রতি কেজি।
বেবি কর্ন ও ফুলকপি আজকের বাজারে দামের হিসেবে বেশ চর্চায়—বেবি কর্ন ₹51–₹65, সর্বোচ্চ ₹84, আর ফুলকপি ₹31–₹39, সর্বোচ্চ ₹51-এ লেনদেন হয়েছে। শীতের শুরুতেই ক্রেতারা আশা করছেন, দিন গড়ালে আরো দাম কমবে।
আজকের বাজারে নজর কাড়ার মতো বিষয় হলো—শাকসবজির দাম কমলেও ফলের মধ্যে আমলকির দাম বেশি—₹95–₹121, সর্বোচ্চ ₹157 প্রতি কেজি। তবে পুষ্টিবিদরা বলছেন, শীতের এই সময়ে আমলকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সবচেয়ে কার্যকর, তাই দাম লাগলেও কেনার প্রবণতা বেশি।
বিক্রেতাদের বক্তব্য অনুযায়ী, সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই টমেটো, ফুলকপি, গাজর, ক্যাপসিকামসহ একাধিক সবজির দাম আরও কমতে পারে। অপরদিকে পাইকারি বাজারে পরিবহণ খরচ বাড়লে কিছু সবজিতে দামের উত্থান–পতন অব্যাহত থাকতে পারে।
রবিবারের বাজারের এই সামগ্রিক চিত্র ক্রেতাদের জন্য যেমন স্বস্তি ও চাপ দু’টিকেই ধরে রেখেছে, ঠিক তেমনই ব্যবসায়ীদেরও নজর রয়েছে আগামী কয়েকদিনের পাইকারি ভোলাটিলিটির দিকে। তবে সকলের প্রত্যাশা—শীত পুরোপুরি নামলেই বাজারে আরও বেশি সবজি এলে দাম অনেকটাই স্বাভাবিক হবে।
