কলকাতা: সপ্তাহের মাঝামাঝি দিনেই ফের চড়ছে সবজির বাজারদর। দীপাবলির পর থেকেই সবজির দামে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকলেও, বুধবারের বাজারে তার প্রভাব আরও প্রকট। পাইকারি ও খুচরো দুই স্তরেই আজ বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির দামে বড়সড় তারতম্য লক্ষ্য করা গেছে। শ্যামবাজার, গড়িয়াহাট, কদমতলা, বেহালা শহরের প্রায় সব বড় বাজারেই সকাল থেকে ক্রেতাদের মুখে একই অভিযোগ “সবজির দাম দিন দিন বাড়ছে, রান্না করা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে!”
আজকের হাল অনুযায়ী বড় পেঁয়াজের দাম ₹২৫ থেকে ₹৩২ প্রতি কুইন্টাল (অর্থাৎ ₹৪১ প্রতি কেজি পর্যন্ত), ছোট পেঁয়াজের দাম ₹৪৭থেকে ₹৬০ প্রতি কুইন্টাল (₹৭৮ প্রতি কেজি)। টমেটোর দামও ফের বেড়ে ₹২৩থেকে ₹২৯প্রতি কুইন্টাল (₹৩৮ প্রতি কেজি)। কাঁচা লঙ্কার দর ₹৪৫থেকে ₹৫৭প্রতি কুইন্টাল (₹৭৪ প্রতি কেজি), যা এক সপ্তাহ আগের তুলনায় প্রায় ₹৬-৮ বেশি।
ঘূর্ণিঝড় মন্থার দাপটে মৃত মহিলা, আহত ২
মূলজাতীয় সবজিগুলির মধ্যে বিটরুটের দাম ₹৩২থেকে ₹৪১ প্রতি কুইন্টাল (₹৫৩ প্রতি কেজি) এবং আলুর দাম ₹২৭থেকে ₹৩৪প্রতি কুইন্টাল (₹৪৫ প্রতি কেজি)। যদিও আলুর দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল, অন্যান্য সবজির ক্ষেত্রে দাম ক্রমশ উপরের দিকে যাচ্ছে।
কলকাতার পাইকারি বাজার সূত্রে খবর, বৃষ্টি ও পরিবহন সমস্যার কারণে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি থেকে সবজি সরবরাহ কমেছে। ফলে সবজির ঘাটতি তৈরি হচ্ছে, আর সেই কারণেই দামের এই হেরফের।
শুধু পেঁয়াজ বা টমেটো নয়, অন্যান্য পাতা ও ফলজাত সবজির দামেও পরিবর্তন হয়েছে। কাঁচকলা (Raw Banana) ₹৯১০ থেকে ₹১১১১ (₹১৫ প্রতি কেজি), লাল শাক (Amaranth Leaves) ₹১৪থেকে ₹১৮ (₹২৩ প্রতি কেজি), আশ গার্ড ₹১৭ থেকে ₹২২(₹২৮ প্রতি কেজি), কলা ফুল ₹১৯থেকে ₹২৪ (₹৩১ প্রতি কেজি)।
ক্যাপসিকাম ₹৪৬ থেকে ₹৫৮ (₹৭৬ প্রতি কেজি), করলা ₹৩৬থেকে ₹৪৬(₹৫৯ প্রতি কেজি), লাউ ₹৩৩ থেকে ₹৪২ (₹৫৪ প্রতি কেজি) এবং বাঁধাকপি ₹২৬থেকে ₹৩৩। ক্যারট ও ফুলকপির দামও কমেনি গাজর ₹৩৯ থেকে ₹৫০(₹৬৪ প্রতি কেজি) এবং ফুলকপি ₹২৯থেকে ₹৩৭ (₹৪৮ প্রতি কেজি)। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে ড্রামস্টিক (সজনে) এবং ছোট পেঁয়াজে। ড্রামস্টিক ₹৫০৫৮ থেকে ₹৬৪৬০ (₹৮৩ প্রতি কেজি), যা উৎসবের পর থেকে সর্বোচ্চ।
খুচরো ব্যবসায়ীরা বলছেন, “সরবরাহে ঘাটতি ও ডিজেলের দামের প্রভাব একসঙ্গে পড়ছে। ফলে দাম আরও কিছুদিন উচ্চ পর্যায়ে থাকবে।” শহরের সাধারণ গৃহবধূদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। অনেকেই বলছেন, এখন বাজার করতে গেলে ৫০০ টাকায় আগের মতো থলেভর্তি সবজি পাওয়া যায় না। বিশেষজ্ঞদের মতে, নভেম্বরের শুরুতে নতুন সবজি বাজারে এলে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে। তবে তার আগে পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে উচ্চ মূল্যের সাথেই মানিয়ে নিতে হবে।


