শরতের শুরুতেই বাজারে বেড়েছে সবজির দাম। একদিকে উৎসবের মরসুম, অন্যদিকে হঠাৎই লাফিয়ে উঠেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। আজ সকালে কলকাতার পাইকারি ও খুচরো বাজার ঘুরে দেখা গেল—পেঁয়াজ, টমেটো, কাঁচালঙ্কা থেকে শুরু করে ক্যাপসিকাম, বিট সবকিছুর দামেই লেগেছে আগুনের ছোঁয়া। ফলে সাধারণ ক্রেতার কপালে ভাঁজ।
বড় পেঁয়াজের দাম আজ কেজিপিছু ২৬ থেকে ৪৩ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। ছোট পেঁয়াজের দাম আরও বেশি—৪৯ থেকে ৮১ টাকার মধ্যে। টমেটোর দামও ছাড়ছে না এক কিলো টমেটোর দাম ২৩ থেকে ৩৮ টাকার মধ্যে উঠানামা করছে। বিশেষ করে বৃষ্টি ও সরবরাহে ঘাটতির কারণে টমেটোর বাজারে এই বৃদ্ধি বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
মাছ-ভাত খাওয়ার হারে দেশে প্রথম পাঁচে নেই পশ্চিমবঙ্গ
কাঁচালঙ্কার দামও আজ বেশ চড়া ৪২ থেকে ৬৯ টাকা কেজি। গরমে যেমন কাঁচালঙ্কা বিক্রি কিছুটা কমে, এখন শরতের রান্নায় চাহিদা বেড়েছে, ফলে দামও বাড়তি। আলুর দামও ধীরে ধীরে বাড়ছে, বর্তমানে এক কিলো আলুর দাম ২৮ থেকে ৪৬ টাকার মধ্যে। শাকসবজির মধ্যে নোটে শাক, কচুপাতা, লাউ, করলা, বাঁধাকপি, গাজর, ফুলকপি সবগুলিরই দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা কেজি। বিশেষ করে করলার দাম ৩৪ থেকে ৫৬ টাকার মধ্যে, যা কয়েকদিন আগেও ছিল ২৫-৩০ টাকায়। লাউও আজ ২৯ থেকে ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির পাশাপাশি ফলমূলেও কিছুটা বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। আমলা প্রতি কিলো ৬৫ থেকে ১০৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যারা সকালে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল কিনতে চান, তাঁদের জন্য আজ একটু বাড়তি খরচের সম্ভাবনা। ক্যাপসিকাম, বেবিকর্ন, বাটারবিন এই ধরনের সবজি যা সাধারণত রেস্টুরেন্ট বা শহুরে রান্নায় ব্যবহৃত হয়, তার দামও উর্ধ্বমুখী। আজ ক্যাপসিকামের দাম ৪০ থেকে ৬৬ টাকা কেজি, বেবিকর্ন ৪৮ থেকে ৭৯ টাকা কেজি। এই দামের বৃদ্ধিতে হোটেল ব্যবসায়ীরাও চিন্তায় পড়েছেন।
সবজি বিক্রেতারা বলছেন, “সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে বিহার ও ঝাড়খণ্ড দিক থেকে আসা ট্রাকগুলি কয়েকদিন ধরে সময়মতো পৌঁছাতে পারছে না। ফলে পাইকারি দামে চাপ পড়ছে।” অন্যদিকে খুচরো ক্রেতাদের কথায়, “রোজকার রান্নার খরচ আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। উৎসবের পর দাম একটু কমবে, এই আশাতেই আছি।”
মৌসুমি পরিবর্তন, পরিবহন খরচ বৃদ্ধি, এবং পাইকারি বাজারে অস্থিরতার কারণে আগামী সপ্তাহেও দামের এই ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানাচ্ছে বাজার সূত্র। তবে কিছু পণ্য যেমন কচু, বাঁধাকপি, আর লাউ এই তিনটি সবজির দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে। ফলে মধ্যবিত্তের রান্নাঘরে এই সবজিগুলির চাহিদা এখন তুঙ্গে।
সব মিলিয়ে আজকের সবজির বাজারে হাসির চেয়ে চিন্তাই বেশি। শরতের সকালে বাজারের ঝুড়ি ভর্তি করতে গেলে খরচ বাড়বে প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত। তাই বাজারে যাওয়ার আগে দাম জেনে যাওয়া এখন সময়ের দাবি।