রাবণের চরিত্রে ধরা দিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ

tmc-leader-kunal-ghosh-ravana-look-drinks-sri-lankan-damro-tea

তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) আবারও খবরের শিরোনামে—তবে এবার কোনো রাজনৈতিক মন্তব্যে নয়, একেবারে অভিনব ভঙ্গিতে ‘রাবণ চরিত্রে ধরা দিলেন’ তিনি! নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে কুণাল লেখেন,

Advertisements

“রাবণের প্রিয় চা খাচ্ছি? সকালে উঠে চা খেতেন, রানি মন্দোদরি চা পাঠাতেন, কোনো কোনোদিন দশ কাপ, দশ মাথার জন্যে। কুম্ভকর্ণও নাকি দীর্ঘ নিদ্রা শেষে এই চা খেতেন। আসলে শ্রীলঙ্কার চা দারুণ। যুগ যুগ ধরেই হয়। সূত্রের খবর, এই DAMRO চা নাকি তারই শ্রেষ্ঠ উত্তরসূরি। শ্রীমান দীপ্তাংশু মণ্ডল শ্রীলঙ্কা থেকে এনে দিল। খেলাম। ফিলিং রাবণ!!”

এই রসিকতাপূর্ণ পোস্ট মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকে প্রশংসা করেছেন কুণাল ঘোষের রসবোধ ও গল্প বলার ঢঙ, আবার কেউ কেউ মজার ছলে লিখেছেন—“চা খাওয়ার গল্পে এখন রাজনীতির গরম চায়েও হার মানে না!”

   

☕ রাবণ থেকে ‘দামরো চা’—এক অভিনব মিলন

কুণালের এই পোস্ট শুধু হাস্যরসেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা এক ধরনের সাংস্কৃতিক ইঙ্গিতও বহন করছে। রাবণ, রামায়ণের এক জটিল চরিত্র—যার জ্ঞান, ক্ষমতা এবং অহঙ্কার একইসঙ্গে প্রশংসিত ও সমালোচিত। সেই চরিত্রের সঙ্গে নিজের তুলনা টেনে কুণাল ঘোষ আসলে যেন বলতে চেয়েছেন—“আমি অন্যরকম, ব্যতিক্রমী।”

এই পোস্টের মাধ্যমে কুণাল রাজনীতির গাম্ভীর্য থেকে বেরিয়ে এক মজার সাংস্কৃতিক মুহূর্ত তৈরি করেছেন। তিনি যে একজন চা-প্রেমী, তা আগেই বহুবার বোঝা গিয়েছে তাঁর নানা ভিডিও বা লাইভ থেকে। তবে এবার তিনি চা-প্রেমকে শ্রীলঙ্কার ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত করেছেন, যেখানে “দামরো চা” নামটি উল্লেখ করেছেন বিশেষভাবে।

শ্রীলঙ্কা বিশ্বের অন্যতম সেরা চা উৎপাদক দেশ। সেখানকার সিলন চা আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাত। আর সেই ঐতিহ্যের অংশ হিসেবেই দামরো চা বর্তমানে জনপ্রিয়। কুণালের মন্তব্য, “রাবণের চা”—শুধু একটি রসিকতা নয়, বরং সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধনের ইঙ্গিতও বটে।

📰 রাজনীতির বাইরে এক হালকা দিক

কুণাল ঘোষ বরাবরই রাজনীতির পাশাপাশি সংস্কৃতি ও মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত। সাংবাদিকতা থেকে রাজনীতিতে পা রাখা এই নেতা প্রায়ই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের মতামত প্রকাশ করেন হাস্যরসের সঙ্গে। তাঁর এই নতুন পোস্ট সেই ধারারই একটি নিখুঁত উদাহরণ—যেখানে রাজনীতির তীব্রতা ছেড়ে তিনি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছেন।

তবে রাজনৈতিক মহলে অনেকে বলছেন, এই পোস্টও এক ধরনের বার্তা বহন করে। রাবণ যেমন ছিলেন জ্ঞানের প্রতীক, তেমনি সমাজের বিতর্কিত চরিত্রও। কুণালের “ফিলিং রাবণ” উক্তিটি অনেকেই ব্যাখ্যা করছেন তাঁর নিজের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার প্রতীক হিসেবেই—যেখানে প্রশংসা ও সমালোচনা দু’টিই সমানভাবে ঘিরে রাখে তাঁকে।

Advertisements

💬 সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া

কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পোস্টটি ভাইরাল হয়ে যায়। নেটিজেনরা নানা মন্তব্য করেছেন—

  • “কুণালদা রাবণ হলেও চা খেয়ে শান্তিতে আছেন!”
  • “এবার তৃণমূলের চায়ের রাজনীতি শুরু হবে!”
  • “রাজনীতিতে রাবণ দরকার, যে সত্যি কথা বলে।”

একজন ইউজার মজার ছলে লিখেছেন, “এত মাথা থাকলে কফি নয়, চা-ই লাগবে বেশি!”

এইসব মন্তব্যের মধ্যেই বোঝা যায়, মানুষ রাজনৈতিক নেতার এই মানবিক ও রসিক দিক দেখতে ভালোবাসে।

🌿 দামরো চা কী?

‘DAMRO Tea’ শ্রীলঙ্কার একটি বিখ্যাত ব্র্যান্ড, যা মূলত নুয়ারা এলিয়া ও ক্যান্ডি অঞ্চলে উৎপাদিত। চা পাতার গন্ধ, ঘ্রাণ ও মৃদু তিতকুটে স্বাদ একে আলাদা করে তোলে। বিশ্বজুড়ে বহু চা-প্রেমী এই ব্র্যান্ডকে পছন্দ করেন। কুণাল ঘোষের পোস্টের পর অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় দামরো চা সার্চ করতে শুরু করেছেন—যা ব্র্যান্ডের জন্যও একটি অপ্রত্যাশিত প্রচার তৈরি করেছে।

আজকের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যেখানে নেতারা প্রায়শই বিতর্ক বা বিবাদের মধ্যেই আলোচনায় আসেন, সেখানে কুণাল ঘোষের এই হালকা, মানবিক পোস্ট জনমানসে এক নতুন সুর আনল।

একজন রাজনীতিক যখন নিজের হাস্যরস ও সংস্কৃতির মিশ্রণে মানুষকে আনন্দ দিতে পারেন, সেটাই আসলে সমাজের জন্য সবচেয়ে ইতিবাচক বার্তা।

তৃণমূল নেতার এই পোস্ট প্রমাণ করল—চা হোক বা রাজনীতি, সঠিক মিশ্রণ হলে মন ভালো করতেই পারে।