কলকাতা: ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধের ঠিক ১০০ বছর পর ১৮৫৭ সালে ভারতের ব্রিটিশ সিপাহীদের একাংশ বিদ্রোহ ঘোষণা করে। যা ইতিহাসের পাতায় সিপাহী বিদ্রোহ নামে সকলের কাছে পরিচিত। ইতিহাসবিদদের মতে এই সিপাহী বিদ্রোহই ভারতের প্রথম স্বাধীনতা আন্দোলন। কিন্তু বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা এবং ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় এই সিপাহী বিদ্রোহ নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন।
তিনি বলেছেন এই সিপাহী বিদ্রোহ আসলে মুঘল সাম্রাজ্যের পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াই। তিনি বলেছেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে একজনও মুসলিম খুঁজে পাওয়া যাবে না। তিনি তার এক্স হ্যান্ডেলের পোস্টে লিখেছেন “একদলের নাম দেওয়া হয়েছে যারা প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধে (যাকে অনেকে ভুল করে সিপাহী বিদ্রোহ বলেন) অংশগ্রহণ করেছিল।” এদের লক্ষ্য ছিল স্বাধীনতা নয়, মুঘল সাম্রাজ্যের পুনঃপ্রতিষ্ঠা। ইংরেজরা আমাদের কাছে যতটা বিদেশী, মুঘলরাও ততটাই । এর মধ্যে অথর্ব ‘সম্রাট’ বাহাদুর শাহ থেকে তার পুরো গুষ্ঠির নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
‘আধার থাকলেই ভোটাধিকার?’ বিদেশিও কি ভোটার? প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট
তবে তথাগতের এই উক্তির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন নেটিজেনরা। অনেকেই বলেছেন সিপাহী বিদ্রোহের আসল কারণ কার্তুজ বিতর্কের ধর্মীয় ঘটনা হলেও ধর্ম ছাড়াও সেই বিদ্রোহের অন্যান্য রাজনৈতিক কারণও ছিল। কারণ গুলির মধ্যে প্রধান ছিল লর্ড ডালহৌসির ‘অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি’ এবং অন্যান্য রাজ্য দখলের নীতি। এছাড়াও ১৮৫৪ সালে বেরার এবং ১৮৫৬ সালে অযোধ্যার অধিগ্রহণ ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব বাড়িয়ে তোলে।
তথাগতের এই পোস্টার বিপরীতে নেটিজেনদের মত “আবিদ হাসান সাফরানি সিপাহী বিদ্রোহ করেছিলেন না সৈফুদ্দিন কিচলু ?? তা বড় কথা নয়। তারা আরও বলেছেন “ জয় হিন্দ “ স্লোগান টা আবিদ হাসান সাফরানির তৈরী। তারা এর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন তথাগতের কাছে যে স্বাধীনতা আন্দোলনে হিন্দু মহাসভা বা আর এস এসের ১০ জনের নাম বলতে যারা জেল খেটেছেন। তারা তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট করেছেন যে সিপাহী বিদ্রোহে হিন্দু মুসলিম দুজনের ভাবাবেগেই আঘাত লাগে এবং তারা যুদ্ধ ঘোষণা করে।
কিন্তু পরবর্তীকালে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে হিন্দুত্ববাদী আরএসএস এর ভাবাবেগে কি আঘাত লাগেনি। তবে তারা ব্রিটিশদের তাবেদারী করেছিল কেন। তবে সাধারণ মানুষের মতে ভারতবর্ষের ইতিহাস বিকৃত না করে এবং ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা না করে বাংলার আসল সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করার প্রয়োজন।
